মদনমোহন সামন্ত, বিধাননগর, ০১ মার্চ ২০২৪ :— দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের দেয় “মানবিক” প্রকল্পের (প্রতিবন্ধী ভাতা) পরিমাণ মাসিক এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করার দাবিতে শুক্রবার বিধাননগরের করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডের পাশে নিবেদিতা ভবনের সামনে পাঁচ শতাধিক প্রতিবন্ধী মানুষের অবস্থান বিক্ষোভ চলল পশ্চিমবঙ্গ প্রতিবন্ধী ঐক্যমঞ্চের উদ্যোগে।
মঞ্চের তরফে অবস্থানবিক্ষোভ চলাকালীন বিকাশ ভবনে নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের মাননীয়া মন্ত্রী, ডাঃ শশী পাঁজাকে গণ-স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি থাকলেও নিরাপত্তার কারণে প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে দফতরের আধিকারিকরা স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
অবস্থানবিক্ষোভ মঞ্চে বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে মূলত বলেন — পরিতাপের বিষয়, বছরের পর বছর দাবি জানানো সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটেও “মানবিক” ভাতার পরিমাণ মাসিক মাত্র এক হাজার টাকা থেকে বাড়ল না এক পয়সাও। সরকারের এই অমানবিক পদক্ষেপ কি দরিদ্র পরিবারভুক্ত প্রতিবন্ধীদের প্রতি চরম বঞ্চনা নয় ? অন্যান্য ভাতা যেমন “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার”-এর পরিমাণ সামান্য হলেও বৃদ্ধি করে তাঁরা তো এটাই স্বীকার করলেন যে, এই দুর্মূল্যের বাজারে এত অল্প ভাতায় কিছুই হয় না। তাঁদের ক্ষোভ, প্রতিবন্ধীদের বেলায় এই দায়টুকুও নেই সরকারের! কারণ হিসাবে তাঁরা বললেন, এই রাজ্যে ২৫ লক্ষেরও বেশি প্রতিবন্ধকতা-যুক্ত মানুষ অর্থের অভাবে ধুঁকতে থাকলেও সরকারের বিচারে তারা অসংগঠিত, সুতরাং ব্রাত্য! ফলে নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে তারা গুরুত্বহীন! প্রতিবেশী ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায় এই ভাতার পরিমাণ মাসিক দু’হাজার টাকা। তেলেঙ্গানায় সবচেয়ে বেশি মাসিক চার হাজার টাকা। অন্য অনেক রাজ্যেই দুই বা তিনগুণ বেশি এই ভাতা। এই রাজ্যের প্রতিবন্ধীরা কী অপরাধ করল, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা ?
এছাড়াও, তাঁরা চাইছেন অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা এবং বিভিন্ন আবাস যোজনাতে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি। প্রতিবন্ধীদের জন্য ১০০ দিনের কাজ এবং জব কার্ড প্রদান। প্রতিবন্ধীদের উপযুক্ত শৌচাগার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ। প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে মাসে একশো ইউনিট বিদ্যুৎ ও বছরে রান্নার গ্যাস ছ’টি প্রদান। সমস্ত বাসে অন্তত দু’টি আসন প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ করা এবং বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের অধিকার প্রদান।
এদিন বিকাশ ভবনে সংশ্লিষ্ট দফতরে স্মারকলিপির ফলাফল তেমন কিছু সদর্থক হয়নি বলে জানা গিয়েছে। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে তারা স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট বিভাগে ফরোয়ার্ড করে দেবে। সমাজকল্যাণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে ফরোয়ার্ড করে দেবে। মুখ্যমন্ত্রীর অফিসেও দিতে বলেছে। যদিও ইতিমধ্যে তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ডিজেবিলিটি কমিশনেও একটা চিঠি দিতে বলেছে, যেটা ওরাও পাঠাচ্ছে পাশাপাশি ঐক্যমঞ্চকেও দিতে বলেছে। প্রত্যেকবার যা হয়ে থাকে, আলাদা করে নতুন কিছু সুরাহা হয়নি।