বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: হ্যাঁ, ৯৭ বছর বয়সেও তাঁর স্মৃতি খুবই স্পষ্ট। তিনি ডাঃ সুকুমার চন্দ্র। আর জি কর কাণ্ডে এই বৃদ্ধ ডাক্তারের চোখে জল। স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, “২২ নম্বর ঘরে থাকতাম।
আমার রুমমেট ছিলেন বিখ্যাত ফুটবলার বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়, জিতেন সেনরা। আরজি করের গেট দিয়ে ঢুকলে মনে হত মন্দিরে ঢুকলাম।” সেই মন্দিরের ঘটনায় তিনি চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি। তিনি জানান, সাহিত্যিক তারাশঙ্করের পরামর্শে তিনি পাশ করেই গ্রামে এসে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা করা শুরু করেন। আজ ৯৭ বছর বয়সেও নামমাত্র ফি-তে মানুষের চিকিৎসা করেন। বীরভূমের লাভপুরের সেই প্রবাদপ্রতিম চিকিৎসক সুকুমার চন্দ্র আরজি কর কাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন। জানালেন, আরজি করের ঘটনার কথা টিভিতে দেখলেই চোখে জল চলে আসে। আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি চাইলেন তিনিও। তাঁর সময়ের আরজি কর আর বর্তমান সময়ের এই কলেজের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য বলে মন্তব্য করেন চিকিৎসক সুকুমার চন্দ্র। লাভপুরের মহুগ্রামের বাসিন্দা সুকুমার চন্দ্র। স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি বিশু ডাক্তার। ৯৭ বছর বয়সেও রোগী দেখেন। একদম নামমাত্র ফি-তে। গতবছর নভেম্বরে তাঁর একমাত্র পুত্রের মৃত্যু হয়। পুত্রও চিকিৎসক ছিলেন।
খুবই অল্প বয়সে পুত্রের মৃত্যু হয়। তিনি জানান, গতবছর নভেম্বরে তাঁর একমাত্র পুত্রের মৃত্যু হয়। পুত্রও চিকিৎসক ছিলেন। পুত্রের মৃত্যু দিনও রোগী দেখেছেন সুকুমার চন্দ্র। তাঁর কথায়, “রোগীরা আমার আত্মীয় স্বরূপ।” তিনি মুখ খুললেন এই আর জি কর কান্ড নিয়ে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তারাশঙ্করের একাধিক গল্পে আছে এই বিশু ডাক্তারের কথা। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত আরজি কর কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তখন চিকিৎসকরা কেমন ছিলেন জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, “তখনকার চিকিৎসকরা টাকা, পয়সার কথা ভাবতেন না। মানবিকতা, হৃদ্যতা ছিল। রোগীরা কেমন আছেন, রাতে সেই খবর নিতেন চিকিৎসকরা।” আরজি করের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ আর্থিক দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন। নিজের সময়কার অধ্যক্ষদের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সময় অধ্যক্ষ ছিলেন এম এন বোস। তিনি মোহনবাগানের সভাপতি ছিলেন। পয়সার কোনও বিষয়ই ছিল না।” এভাবেই তিনি তুলে ধরেন দুটি যুগকে।