বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:মধ্যরাতে আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। আর এই ঘটনায় একেবারে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। ঘটনার প্রতিবাদে আরজি কর সহ একাধিক সরকারি হাসপাতালে শুরু হয়েছে কর্ম বিরতি। সিবিআই তদন্তের দাবিতে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ডান-বাম সমস্ত রাজনৈতিক দলই। চাপ বাড়ছে শাসকদলের উপর। আর এর মধ্যেই কার্যত বড় সাফল্য কলকাতা পুলিশের।
শুক্রবার রাতেই পুলিশের জালে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। প্রথমে দোষ স্বীকার না করলেও দফায় দফায় জেরা শেষে নিজের কীর্তি স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জানা যাচ্ছে, ধৃত সঞ্জয় একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। কলকাতা পুলিশের অধীনেই কাজ করত। তবে তাঁর কাজ ছিল একটি এজেন্সির হয়ে যে সমস্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকত তাদের তথ্য সংগ্রহ করা। আর সেই সূত্রেই সে মাঝে মধ্যেই সে হাসপাতালে আসত।
তেমনই বৃহস্পতিবার রাতেই সে হাসপাতালে গিয়েছিল বলে খবর। তবে কেন গভীর রাতে সঞ্জয়ের যাওয়ার প্রয়োজন পড়ল তা স্পষ্ট হচ্ছিল না কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের কাছে। ঘটনার পরেই জরুরি বিভাগের বিভিন্ন অংশে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেন লালবাজারের তৈরি বিশেষ তদন্তকারী দল কিংবা সিটের সদস্যরা। তাঁরা দেখেন, রাত ২.৩০ থেকে ৩টে নাগাদ দোতলা , তিনতলার করিডরে সঞ্জয় রায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছেন। এমনকি চেস্ট বিভাগের কাছের সিসিটিভিতেও দেখা যায় তাঁকে।
যদিও অন্য কাউকে অবশ্য সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা যায়নি। ফলে সঞ্জয়কে নিয়ে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। তাঁর বিষয়ে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মী, নার্স এবং চিকিৎসকদের কাছ থেকে সঞ্জয়ের বিষয়ে তথ্য নিতে শুরু করেন আধিকারিকরা। জানতে পারেন, মাঝে মধ্যেই সে হাসপাতালে রোগী ভর্তি করতে নাকি আসেন। এরপরেই বিষয়টি নিয়ে আরও গভীরে যান আধিকারিকরা। শুক্রবার রাতে কোনও রোগী ভর্তি হয়েছেন কিনা তা জানার চেষ্টা করেন। জানতে পারেন কেউই ভর্তি হয়নি।
তাহলে কেন সে হাসপাতালে আসে এবং ঘটনাস্থলে ঘুরে বেড়াচ্ছে? এরপরেই সিসিটিভিতে নজরে আসে সঞ্জয়ের গলায় একটি সাদা রঙের ব্লু-টুথ হেডফোন। একই রকমের একটি হেড ফোনের ছেঁড়া অংশ উদ্ধার হয় মৃত ছাত্রীর পাশ থেকেও। তাৎপর্যপূর্ণ সঞ্জয় আরও একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে আসে পুলিশের। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সে বেরিয়ে যাচ্ছে হাসপাতাল থেকে। কিন্তু সেই সময় হেডফোনটি তাঁর কাছে ছিল না। এরপরেই তড়িঘড়ি দক্ষিণ কলকাতা থেকে সঞ্জয় রায়কে আটক করে পুলিশ।
এরপরেই দফায় দফায় সঞ্জয়কে জেরা করে। শুধু তাই নয়, ধৃতের মোবাইল থেকে বেশ কিছু অশ্লীল ভিডিও এবং তথ্য পান। সমস্ত বিষয়কে সামনে রেখে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। একাধিক অসংতি পান আধিকারিকরা। এরপরেই গ্রেফতার দেখানো হয়।