বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: ঈদ’ একটি আরবি শব্দ, যার আর্থ আনন্দ বা উৎসব। ইসলাম ধর্মের মানুষদের কাছে ঈদ খুবই পবিত্র উৎসব।

 

এই উৎসব মূলত একদিকে যেমন প্রত্যেক মানুষের মন ও শরীরকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনই এই উৎসবের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে মৈত্রীর সম্পর্ক তৈরী করে। তাই এই দিন প্রত্যেকে প্রত্যেককে আলিঙ্গন করে বলে – ‘ঈদ মুবারক’, অর্থাৎ পারিবারিক ও সামাজিক আনন্দ সর্বত্র ছড়িয়ে দাও।

ইসলাম ধর্মের মানুষেরা বছরে দু’বার ঈদ পালন করে – একটি হল ইদ উল ফিতর, অন্যটি হলো ইদ আল আদাহ। ইদ-আল আদাহকে বকরি ইদও বলা হয়। দুটি উৎসবই পবিত্র চাঁদকে স্মরণ করে পালন করা হয় কিন্তু দুটি উৎসবের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি পার্থক্য।

ইদ-উল-ফিতরের সঙ্গে যুক্ত আছে রমজান মাস। রমজান মাসের এক মাসের রোজা ভাঙার পড়ে পালন করা হয় ইদ-উল-ফিতর। আর কমবেশি তার ৭০ দিন পড়ে পালিত হয় বকরি ইদ।

আজ সোমবার, ১৭ জুন সারা বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মের মানুষেরা পালন করছেন পবিত্র বকরি ইদ। আরবিতে ‘বকরি’ শব্দের অর্থ হল গাভী বা গরু, তাই গরু বলি দেওয়ার মাধ্যমেই মূলত এই উৎসবটি পালন করা হয়। এই বলি প্রথা আসলে মানুষের মনের গভীরে বাস করা কাম, ক্রোধ, লোভ, লালসাকে বলি দিয়ে মনকে বিশুদ্ধ করা।

ইসলাম ধর্মের মানুষদের কাছে এই বক্রি ঈদ খুবই পবিত্র। হিন্দু ধর্মের যেমন মূল দর্শন ‘ত্যাগের মধ্য দিয়েই ভোগ করো’ ঠিক তেমনই বক্রি ঈদ হলো ইসলাম ধর্মের ত্যাগের উৎসব। মানুষকে ত্যাগ করতে শেখায় এই উৎসব। এই যে বলি দেওয়া হয়, তা আসলে ত্যাগের প্রতীক। এর তিনটি পর্যায় আছে – প্রথম হলো আল্লা বা গরিব মানুষকে দান করা। দ্বিতীয় – বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনকে দান করা আর তৃতীয়, যদি অবশিষ্ঠ থাকে তবে নিজের পরিবারের মধ্যে তা ভাগ করে নেওয়া। এই দানের উৎসব সমাপ্ত করে পরস্পরকে আলিঙ্গন করে ‘ ঈদ মুবারক’ ধ্বনি দেওয়া। আধুনিক বিশ্বে এই ঈদ মুবারক আর শুধু ইসলাম ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম ধর্মের মানুষ আজকের দিনে সমস্ত ধর্ম ও বর্ণের মানুষদের বুকে টেনে নিয়ে বলে ওঠেন -‘ঈদ মুবারক।’ এটা এখন এক সার্বজনীন রূপ পেয়েছে। যা আমরা খুঁজে পাই উপনিষদে ‘বসুধৈব কুটুমবকম’ (অর্থাৎ এই বিশ্বই আমার আত্মীয়) শ্লোকের মধ্যে। তাই আধুনিক বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ‘ঈদ’এর গুরুত্ব অপরিসীম।

আসুন বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে আমরাও বলি – ‘ঈদ মুবারক’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *