বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:বিজেপির উচিত হবে সবকিছুকে পাশে সরিয়ে রেখে তিন রাজ্যের দিকে মন দেওয়া। তিনটি রাজ্যের মধ্যে অন্তত দুটিকে বাঁচাতে হবে। যদি তা না করা যায়, তাহলে বিরোধীরা বলার সুযোগ পাবে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের কারণে সঙ্গীরা চলে যাচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পরে এমনটাই মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোরের।
যে তিনটি রাজ্যের কথা বলছেন প্রশান্ত কিশোর, সেই তিনটি রাজ্য হল হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্র। এই তিন রাজ্যেই বছরের শেষের দিকে নির্বাচন হতে চলেছে। তিনি বলেছেন, বিজেপি যদি, ওই তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সবকটি রাজ্যই হারায়, তাহলে তারা কেন্দ্র জোট সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না।
ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, তিনি এখনই বলতে পারছেন না, তারা সরকার চালাতে সক্ষম হবে না। তিনি বলেছেন, পুরো বিষয়টি মানুষই তৈরি করেছে। যে কারণে ইন্ডিয়া ব্লকের নেতারা বলছেন, তারা সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। যাঁরা বিজেপি বিরোধিতা করছেন, তাঁদেরকে সবপকিছুকে পাশে সরিয়ে রেখে তিনটি রাজ্যের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। আর বিজেপি হলে, তিনটি রাজ্যের মধ্যে অন্তত দুটিকে দখল করতে হবে।
প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, কোনও জোটের শরিকদের মধ্যে অসন্তোষ থাকতে পারে। তবে নেতায়রা জনসাধারণের মন বোঝার চেষ্টা করবে। শরিকরা যদি মনে করে, বিজেপি জিততে পারবে না, তখন তারা বিকল্পগুলি ভাবতে শুরু করবে।
বিজেপি ২৪০-এ আটকে যাওয়ায় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা এই মুহূর্তে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর ১২ টি আসন, চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপির ১৬ টি এবং একনাথ শিন্ডের শিবসেনার সাতটি আসনের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
হরিয়ানার ফল সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, সেখানে, জাট, দলিত, মুসলিম ভোট একত্রিত হয়েছিল। তবে এই তিন সম্প্রদায়ের ভোট আগেও একসঙ্গে হয়েছে। তারপরেও বিজেপি জয়লাভ করেছিল। প্রসঙ্গত এবার হরিয়ানার ১০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি ও কংগ্রেস পাঁচটি করে আসন পেয়েছে। কিন্তু ২০১৯-এর নির্বাচনে বিজেপি দশটি আসনেই জয় পেয়েছিল। তারপর বিধানসভা নির্বাচনে ৯০ টি আসনের মধ্যে ৪০ টিতে জয়লাভ করেছিল।
মহারাষ্ট্রে এবার কংগ্রেস ৪৮ টি আসনের মধ্যে ১৩ টি আসন পায়। পরে সাংলির সাংসদ কংগ্রেসে যোগ দেন। ফলে মহারাষ্ট্র থেকে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ১৪ তে।
ঝাড়খণ্ডে লোকসভা নির্বাচনে ১৪ টি আসনের মধ্যে বিজেপি এবার ৮ টি আসন পেয়েছে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেস যথাক্রমে তিন ও দুটি আসন পেয়েছে। আজসু পেয়েছে একটি আসন। ঝাড়খণ্ডে তফশিলি জাতি ও মুসলিমদের পাশাপাশি তফশিলি উপজাতিরাও ফ্যাক্টর। এঁরা একসঙ্গে হলে ভোটের শতাংশে ৫০-এর বেশি। যা বিজেপির পক্ষে চ্যালেঞ্জের। সেই জায়গা থেকে রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা ইন্ডিয়া ব্লক ভুক্ত ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেস সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে।
বিজেপির অভ্যন্তরে কোনও পরিবর্তন হবে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, যদি হয়, তা হবে ধীর গতিতে। আর সঙ্ঘ যদি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চায়, তাহলে তা হবে ধীর গতিতে।