বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: চ্যালেঞ্জের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চ্যালেঞ্জের মুখে ব্র্যান্ড মোদী। কোনও রাজনৈতিক দল কিংবা নেতা চ্যালেঞ্জ না করলেও, দেশের মানুষের চ্যালেঞ্জের মুখে প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকার এমনটাই মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর।
ব্র্যান্ড মোদী যে অজেয় নন, তা এই নির্বাচনে লোকেরা দেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রশান্ত কিশোর। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এটা এমন নয় যে, কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতা তাঁকে চ্যালেঞ্জ করুক বা না করুক, মানুষ তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে বলে মনে করে পিকে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশান্ত কিশোর মনে করেন, বিরোধী দল দুর্বল হতে পারে, কিন্তু সরকার বিরোধিতা দুর্বল নয়। তিনি বলেছেন, যে দেশে ষাট কোটির বেশি মানুষ প্রতিদিন ১০০ টাকার বেশি আয় করতে পারেন না, সেখানে সরকারের বিরোধিতাকে কখনই দুর্বল বলা যায় না। এব্যাপারে কখনই ভুল করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, বিরোধী দল এবং বিরোধীদের গঠন দুর্বল হতে পারে। কিন্তু এই দেশে সরকারের বিরোধিতা কখনই দুর্বল নয়। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, এখন ভারতে কোনও দলই ৫০ শতাংশ ভোট পায় না। একসোজন ভোট দিলে তাঁদের মধ্যে চল্লিশ জন প্রধানমন্ত্রী মোদী, তাঁর আদর্শ, তাঁর কাজ, হিন্দুত্ব, রামমন্দির, ৩৭০ ধারা বাতিলকে সমর্থন করেন। অর্থাৎ সেখানে ৪০ জন খুশি হলেও, বাকি ৬০ জন অখুশি। এর থেকেই প্রমাণ দেশের প্রতিটি মানুষ মোদী সরকারকে নিয়ে খুশি নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। গ্রামের দুর্দশা একটা বড় সমস্যা। এরপরেও যদি বিজেপি জয়ী হয়, তাহলে বলা যাবে, বিরোধী দলগুলি যথেষ্ট শক্তিশালী কিংবা নির্ভরযোগ্য নয়।
ব্র্যান্ড মোদীর শক্তি কমছে, এটা বোঝাতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোর ২০২৪-এর নির্বাচনের সঙ্গে ২০১৪-র নির্বাচনের তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ২০২৪-এর সাধারণ মানুষ মনে করছেন, ভোট দেওয়ার মতো আর কেউ নেই। ২০২৪ ও ২০১৯-এর তুলনায় ব্র্যান্ড মোদীর শক্তি হ্রাস পেয়েছে।
প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, ২০১৪ সালে বিজেপির ভোটারদের মধ্যে একটা উত্তেজনা ছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন মোদী ক্ষমতায় এলে দেশে বড় পরিবর্তন হবে। আর ২০১৯-এ সাধারণ মানুষ মনে করেছিল দেশের উন্নয়নের জন্য বিজেপির আরও পাঁচ বছর সময় পাওয়া উচিত।
তিনি বলেছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে উত্তেজনা হ্রাস পেয়েছে। তাঁরা বলছেন, আমরা কী করব, আর কেউ নেই, শুধু তাঁকেই ভোট দিতে হচ্ছে। প্রশান্ত কিশোর ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ২০১৪-২০১৯-এর মধ্যে বিজেপি যদি কোন রাজ্যে লোকসভায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকে, তবে সেই রাজ্যে বিধানসভায় ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। আর ২০১৯-২০২৪ সালের মধ্যে সেই ব্যবধান বেড়েছে ৯-১০ শতাংশের মতো।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, বিজেপি এবারের নির্বাচনে রামমন্দির নিয়ে বাড়তি কোনও সুবিধা পাচ্ছে না। রাম মন্দিরের নামে বিজেপিকে ভোট দিচ্ছেন, তেমন মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।