বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:অনেক ঢাক ঢোল পিটিয়ে পটনায় ইন্ডিয়া ব্লকের গঠন হয়েছিল মাস সাতেক আগে। তারপর আরও তিনটি বৈঠক হয় ইন্ডিয়া ব্লকের। কিন্তু সময় যত লোকসভা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্যে রাজ্যে ইন্ডিয়া ব্লকে ভেঙে পড়ার বিষয়টি সামনে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল একলা চলোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এবার উত্তর প্রদেশের অখিলেশ যাদবও কংগ্রেস থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেসের মধ্যে আলোচনা ভেঙে গিয়েছে। সূত্রের খবর, কংগ্রেস উত্তর প্রদেশে আশিটির মধ্যে ২০ টি আসন দাবি করেছিল। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি ১৭ টি পর্যন্ত দেওয়ার পক্ষে।
উল্লেখ করা যেতে পারে গত জুলাইয়ে ইন্ডিয়া ব্লক গঠিত হয়। সেই সময় ২৮ টি দল অংশ গ্রহণ করেছিল। পরবর্তী সময়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উত্তর প্রদেশের আরএলডি সরাসরি এনডিএ-তে যোগ দিয়েছে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, জম্মু ও কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্স, পঞ্জাবে আম আদমি পার্টি তাদের রাজ্যে একাই লড়াই করার কথা জানিয়েছে।
এই মুহূর্তে ইন্ডিয়া ব্লকে সব থেকে বড় ধাক্কা হল, দেশের সব থেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশ থেকে। সেখানে লোকসভার আসন রয়েছে আশিটি। কিন্তু কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।
ইন্ডিয়া ব্লকের ধাাক্কাটা শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ থেকে। তৃণমূল কংগ্রেস কংগ্রেসকে রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে দুটি আসন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস রাজি না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন তাঁর দল রাজ্যে একাই লড়াই করবে।
তারপরের ধাক্কা বাংলার প্রতিবেশী বিহার থেকে। যে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একসঙ্গে করে ইন্ডিয়া ব্লকের যাত্রা শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনিই বিজেপি সঙ্গী হয়ে যান।
এরপরের ধাক্কা আসে উত্তর প্রদেশ থেকে। ২০২২-এ উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সহযোগী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আরএলডির নেতা জয়ন্ত চৌধুরী ঘোষণা করেন, তিনি এনডিএতে যোগ দিচ্ছেন।
ইন্ডিয়া ব্লকের সব থেকে বড় দল কংগ্রেসের কাছে পরের ধাক্কা আসে আম আদমি পার্টির থেকে। আপ ঘোষণা করে, পঞ্জাবে তারা একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। প্রসঙ্গত পঞ্জাবে আপ রয়েছে শাসক হিসেবে আর কংগ্রেস সেখানে প্রধান বিরোধী। এখানেই শেষ নয় আপ দিল্লিতে কংগ্রেসকে একটি আসন দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তা কংগ্রেস মেনে নিতে রাজি নয়।
এরপরের ধাক্কা জম্মু ও কাশ্মীর থেকে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লা এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীর-লাদাখে লোকসভায় ছটি আসন রয়েছে। এর মধ্যে এনসির দখলে রয়েছে তিনটি আর বিজেপির দখলে রয়েছে তিনটি।
এখনও পর্যন্ত ইন্ডিয়া ব্লকে সব থেকে শেষ এবং বড় ধাক্কাটি হল উত্তর প্রদেশ থেকে। সেখানে এসপির সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ। কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরে অখিলেশ যাদব দলের তরপে তৃতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছেন।
এই পরিস্থিতি ইন্ডিয়া ব্লকের বর্তমান দশায় বিরোধী দলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে প্রায় দুশোটি আসনে। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশে রয়েছে আশিটি, পশ্চিমবঙ্গে বিয়াল্লিশ, বিহারে চল্লিশ, জম্মু-কাশ্মীর-লাদাখে ছয়, দিল্লিতে সাত ও পঞ্জাবের তেরোটি আসন।