বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির নিয়োগ বাছতে মামলা করেছিলেন যোগ্যরা। সেই মামলাই তাঁদের কাছে বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে।
গতকাল যে রায় কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে তাতে এক কথায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েছেন সকলে। একলহমায় বেকার হয়ে গিয়েছেন কয়েক হাজার শিক্ষক। তাতে যোগ্য-অযোগ্যর ভেদাভেদ নেই।
কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে নিয়ে অদ্ভুত এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্যে। ঠগ বাছতে গিয়ে গোটা গাঁ উজার হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতির দায় কেন নেবেন যোগ্যরা। হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতায় ফের জোটবদ্ধ হচ্ছে আন্দোলন। মঙ্গলবার সকাল থেকে শহিদ মিনারে জমায়েত করতে শুরু করেছেন চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ যাঁরা দুর্নীতি করেছে তাঁদের চাকরি যেতে পারে কেন নির্দোষদের চাকরি যাবে। তাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন।
গতকাল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির রায়ে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায় দান করেছে। তারা ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটাই বাতিল করে দিয়েছেন। তাতে করে ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। শুধু তাই নয় যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবং যাঁরা প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও চাকরি পেয়েছেন তাঁদের বেতন ফেরত দিতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ সহ সেই টাকা ফেরত দিতে হবে বলে নির্দেশে জানিয়েছে আদালত।
আদালতের এই নির্দেশ জানার পরেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। বিরোধীরা এর দায় রাজ্য সরকারের উপর চাপিয়ে সটান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন। এমনকি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ গোটা মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবি করেছেন। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন এবং এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারপ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অন্যদিকে পর্ষদও সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে জানিয়েছে। এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে যাঁরা মামলা করেছিলেন তাঁদের কাছে এই রায় বুমেরাং হয়ে এসেছে। তাঁরা যোগ্যদের চাকরির দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু আদালতের রায়ে তাঁদের ন্যয্য চাকরির দাবিও জলে গিয়েছে। আর যাঁরা যোগ্যতার নিরিখে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদেরও চাকরি গিয়েছে। আদালতের এই রায় পুরোপুরি সকলে মেনে নিতে পারছেন না।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই চাকরিহারারা শহীদ মিনার চত্ত্বরে সমবেত হতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি যাঁরা দুর্নীতি করে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের চাকরি যাক। আমাদের কেন চাকরি যাবে। আমরা পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতার নিরিখে চাকরি পেয়েছিলাম। আদালতের এই নির্দেশ মেনে নেওয়া যায় না বলেই তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।