নিজস্ব প্রতিনিধি : নিম্নচাপের আশঙ্কা রাজ্যে শুরু থেকেই এবার শীতের কনকনানি উপভোগ করছে সান্দাকফু৷ মরশুমের প্রথম শীত এবার এসেছে সান্দাকফুতে৷ কিছুদিন আগেই তাপমাত্রা নেমে গেছিল হিমাঙ্কের নীচে৷ তবে তুষারপাতের দেখা মিলছিল না৷ এবার পর্যটকদের উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে তুষারপাত হল সান্দাকফুতে৷
সাধারণত অন্যান্য বার একদম প্রথমেই এত ঠান্ডা পড়ে না পাহাড়ে৷ তবে এই মরশুমে সব হিসেব বদলে দিয়ে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভব করেছে পাহাড়বাসী এবং তুলনামূলক দেরিতে শীত ঢুকেছে সমতলে৷
এই তুষারপাত পর্যটকদের মধ্যে শীতের সময়ে পাহাড়ে যাওয়ার উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে৷ পাহাড়ের হোটেল মালিকেরা মনে করছেন, তুষারপাতের এই আমেজ পেতে পর্যটকেরা পাহাড়মুখী হবেন৷ বেশ কিছু হোটেলে ইতিমধ্যেই বুকিং শুরু হয়ে গেছে৷ তাঁরা মনে করছেন সপ্তাহের শেষে প্রচুর পর্যটক আসবেন শুধু তুষারপাত দেখতে৷
দুপুর থেকে দার্জিলিং, ঘুম, জোড়বাংলো, সুখিয়াপোরি-সহ বেশ কিছু জায়গায় টানা কয়েক ঘন্টা শিলাবৃষ্টি হয়৷ নেমে যায় তাপমাত্রার পারদ৷ এই বৃষ্টির জেরে গত কয়েকদিনের ৬ ডিগ্রীর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করা তাপমাত্রা এক ধাক্কায় নেমে যায় ৩ ডিগ্রীতে৷ আবার বিকেলে বৃষ্টি হয়৷ দার্জিলিংয়েও তুষারপাতের আশঙ্কা আছে৷
সান্দাকফুর হোটেল ব্যবসায়ী নরবু লামা জানান, ‘গত বছর প্রথম তুষারপাতের সময় পর্যটকই ছিল না। কারণ, ওই সময় সাধারণত তুষারপাত হয় না। এবার অনেক পর্যটক আচমকা তুষারপাত পেয়ে উচ্ছ্বসিত।’ তবে বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
শিলিগুড়িতেও অর্ধেক বেলা আংশিক মেঘাচ্ছন্ন ছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেশ কমে ১৪ ডিগ্রির নিচে চলে এসেছিল। উল্লেখ্য, গত বছর সান্দাকফুতে অক্টোবর মাসেই তুষারপাতের ঘটনা ঘটেছিল। যদিও ঠান্ডা জাঁকিয়ে পড়তে আরও কিছুটা সময় লেগেছিল।
জানা গেছে, সকালে দার্জিলিং পাহাড় ছিল ঝলমলে। টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘাও দেখা গেছে পরিষ্কার। কিন্তু দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া পাল্টাতে শুরু করে। প্রথম কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়। পরে শিলাবৃষ্টিতে রাস্তাঘাট বরফে ঢেকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। এতে ঠান্ডা আরও বেড়ে যায়। এই বৃষ্টি ও ঠান্ডার কারণেই
সান্দাকফুতে হালকা তুষারপাত হয়। যদিও সেই তুষার মাটিতে সেভাবে পড়ে জমতে পারেনি। তবে রাতের দিকে এমনিতেই উষ্ণতা শূন্যের নিচে চলে যাওয়ায় পানীয় জল পর্যন্ত জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে। শিলিগুড়ি সহ পাহাড়ের পাদদেশেও তাই দুপুরের পর থেকে আকাশ খানিকটা মেঘলা দেখা গেছে।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা রাজ্যে শীত এসে গেলেও তার স্থায়ীত্ব নিয়ে চিন্তিত আবহাওয়াবিদরা কারণ আচমকাই হাজির নিম্নচাপ। যার ফলে সপ্তাহের শুরুতেই ধাক্কা খাবে শীত।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে এমন আশঙ্কার কথাই জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, রবিবার পর্যন্ত তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন না হলেও আগামী সপ্তাহের শুরুতেই ফের ধাক্কা খাবে শীত। সাগর থেকে পুবালি হাওয়া ঢুকে পড়ার জেরে পারদ চড়বে। বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।