নিজস্ব প্রতিনিধি , শিলিগুড়ি : প্রায় ২৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে বিবাহিত জীবনে। কিন্তু এত বছর সংসার করার পরেও কোল আলো করে আসেনি কোনও সন্তান ৷
এই অভিযোগেই সমাজ তাকে বহিষ্কার করেছিল কারণ সমাজ মনে করেন গর্ভধারণ না করতে কোনো নারী তাঁর পূর্ণতা পান না ৷ আজও এই ধারণাই প্রচলিত। এই মহিলার নাম সালুমারাদা থিম্মাক্কা।
সালুমারাদা থিম্মাক্কা বিয়ে হয় কর্নাটকের গুব্বি তালুকের বাসিন্দা বেকাল চিক্কাইয়ার সঙ্গে। সন্তান না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে এক অভুতপূর্ব সিদ্ধান্ত নেন থিম্মাক্কা ৷ তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন যে, গাছ লাগাবেন ৷
সন্তানের মতোই চারাগাছগুলিকে বড় করে তুলবেন ৷ শুরুর দিকে প্রথম বছরে ১০টি, দ্বিতীয় বছরে ১৫টি, তৃতীয় বছরে ২০টি বটগাছের চারা লাগালেন। এক সময় এই সন্তানদের দেখাশোনার জন্য দিনমজুরির কাজও ছেড়ে দেন চিক্কাইয়া।
থিম্মাক্কা রোজগার করতেন, আর বাড়ি ফিরে স্বামীর সঙ্গে সন্তানসুলভ গাছদের দেখভাল করতেন। যদিও থিম্মাক্কার এইসব ব্যাপারে কোনোরকম ধারণা ছিল না।
ভূমিহীন দিনমজুর এই দম্পতি সমাজেও ছিলেন একঘরে, কারণ তারা বন্ধ্যা। কথা বলার সমস্যা থাকায় চিক্কাইয়াকে তাঁর পড়শিরা বলত তোতলা চিক্কাইয়া। তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নেন সমাজের বঞ্চনার জবাব দেওয়ার। তখনই মাথায় আসে গাছ লাগানোর বিষয়টি।
গত ৮০ বছরে প্রায় ৮০০০ গাছ পুঁতে তাদের বড় করে তুলেছেন ১০৬ বছর বয়সী এই বৃক্ষমাতা। সেই থিম্মাকাই এ বার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নের কারণেই।