আমরা কেউ সমস্ত কাজকর্ম ত্যাগ করে ফেলি না কোনওকিছুর জন্যই। পৃথিবী এবং জীবন তো গতিশীল। কিছু শয়তানের কাজের জন্য যদি আমরা নিজেদের জীবনের গতিকে স্তব্ধ করে দিই, তাহলে তো তারা জিতে গেল!
কিন্তু, তেমনটা তো কখনওই হতে দেওয়া যাবে না! আমরা শিক্ষকরাই পারি এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে। আমরা সকলে মিলেই হাতে হাত বেঁধে সেই কাজেই ব্রতী হই। এই চরম দুঃখজনক ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে এই সুযোগে যারা সমাজে বিষ উগরে দিয়ে সমাজ তথা দেশকে ভিতর থেকেই টুকরো-টুকরো করে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত।
আমরা শিক্ষকরাই পারি সচেতনতা গড়ে তুলে সেই আসল টুকরা-টুকরা গ্যাং এর সদস্যদের অপচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে। স্বাধীনতার আগে দেশের সামনে ব্রিটিশ বা ইংরেজ নামক বিপদের মোকাবিলা করতে ঠিক যেমনভাবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ ভুলে ভারতবাসী হিসাবে সকলেই এগিয়ে এসেছিলেন, আজও সেই একইরকমভাবে আমরা সকলেই এগিয়ে আসি ভারতবাসী পরিচয়ে।
আর এই কাজটি নেতৃত্ব শিক্ষকগণ ছাড়া আর কারাই বা ভালো দিতে পারেন? কোনো দিন এই খেলা শেষ হবে না। কারন, দুই দেশের রাজনীতিকরা কখনওই এই সমস্যার সমাধান করবে না, বরং বলা ভালো যে হতে দেবে না। কারন, আজ কাশ্মীর একটা রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ডে পরিণত হয়েছে যাকে দুই দেশের রাজনীতিকরা ব্যবহার করবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বা ক্ষমতা ভোগ করতে।
আমরা সাধারন মানুষরাই আবেগ নিয়ে বেঁচে থাকবো, হা-হুতাশ করবো। কিন্তু, টাটা রাজনীতিকদের কিছুই যায় আসবে না। সেনাবাহিনীতে আমাদের মতন সাধারণ গরীব, মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে-মেয়েরাই যাবে তাদের বাবা-মা, বউ,ছেলে-মেয়ের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে। দেশকে রক্ষা করার মহান কাজের দায়িত্ব তারাই ঘাড়ে নেবে আর রাজনীতিকরা দেশকে —– দায়িত্ব নেবে।
নেতা-মন্ত্রীরা তাদের ছেলেদের সেনাবাহিনীতে পাঠায় না বা তার স্বপ্নও দেখে না! মরার দায় তো সাধারন মানুষের ! এমনটা মেনে নেওয়া সাধারন মানুষদের পক্ষে কঠিন হলেও, এটাই অলিখিত নিয়ম, এটাই নিয়তি! সাধারন মানুষের কাছে এর জবাব দেওয়ার একটু সুযোগ আছে শুধুমাত্র নির্বাচনে। কিন্তু, EVM মেশিন নিয়ে ওঠা সন্দেহের বাতাবরণের ঠেলায় সেটুকু ক্ষমতাও বোধহয় নড়বড়ে হয়ে যেতে বসেছে!
আমরা সাধারন মানুষ যে কতটা অসহায়, সে আমাদের হতাশা দেখলেই বোঝা যায়… হেরে যাওয়া মানুষ যেমন হেরে গিয়ে রাগে হাতের ধারে যা কিছু পায়, তা ছুঁড়ে ফেলতে চায় , ঠিক তেমনই আমরা সাধারন মানুষও হেরে যাওয়া মানুষগুলোর মতন রাগে যা ইচ্ছা তাই বলছি, যা ইচ্ছা তাই করতে চাইছি!
আর বাস্তবিক অর্থে কার্যকরীভাবে কিছুই না করতে পেরে দেশের মধ্যে নিজেদের মধ্যেই জাত-ধর্ম নিয়ে নিজেরাই ঠেলা-ঠেলি করছি, ইনফাইটিং করছি, দেশকে দূর্বল করার কাজে জড়িয়ে পড়ছি! কিছু মানুষ যারা শহীদদের ঝরানো রক্তকে ব্যবহার করে ভোটে লাভ পেতে চায়, রাজনীতিকদের হাত শক্ত করতে চায়, তারা এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে বিষ উগরে দিতে মাঠে নেমে পড়েছে।
আমার কথা মিলিয়ে নেবেন যে, এই জঘন্য ঘটনাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগানো হবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সুবিধা পেতে! আর এই কাজে কতো ফেক নিউজ, ফেক ছবিকে ব্যবহার করা হবে নিজেদের সুবিধার্থে…. এটাই দূর্ভাগ্য এই দেশের, ডাল-ভাত খেয়ে কোনওরকমে দিন পার করে দেওয়া দেশের আপামর সাধারন জনগনের…. শুধু এটা জেনে রাখুন যে, নির্বাচন আসছে। দেশের জন্য এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ন। কোনওকিছু ঘটা অসম্ভব নয় এই সময়ে। তাই, আমাদের সবাইকেই খুব সতর্ক, সজাগ থাকতে হবে আর নিজেদের জ্ঞান-বুদ্ধিকেই কাজে লাগাতে হবে কোনওকিছু বুঝতে। শিক্ষিত মানুষ হিসাবে অন্যের হাতের তামাক খাওয়া কখনওই উচিত হবে না।
সম্রাট তপাদার, সাধারণ সম্পাদক, প্রদেশ তৃণমূল যুব কংগ্রেস