বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
বিশ্বকাপের আগে এটাই ছিল ভারতের শেষ আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচ। বেঙ্গালুরুতে ম্যাচ নয় যেন হল একটা থ্রিলার ওয়েব সিরিজ। নির্ধারিত ৪০ ওভারে খেলা শেষ হল না। ম্যাচ টাই হওয়ায় খেলা গড়াল সুপার ওভারে। সেখানে খেলা হল টাই। ফলে ম্যাচ গড়াল দ্বিতীয় সুপার ওভারে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে সিরিজের ফল হল ৩-০।
ভারতের দেওয়া ২১৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে খেলতে শুরু করেন দুই আফগান ওপেনার।গুরবাজ এবং জাদরান ওপেনিং জুটিতেই তোলেন ৯৩ রান। দুই ওপেনারই অর্ধশতরান করেন। তবে আফগান ব্যাটিংয়ে প্রথম ভাঙন ধরান কুলদীপ যাদব। ৫০ রান করার পর তাঁকে আউট করেন চায়নাম্যান। তবে দুরন্ত ক্যাচ তালুবন্দি করেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
এরপর অর্ধশতরান করা জাদরানকে ফেরালেন সেই ওয়াশিংটনই। খাতা খোলার আগেই আগে ওরমজাইকে ফেরালেন ওয়াশিংটন। কিন্তু এরপর গুলবাদিন এবং মহম্মদ নবী ফের চিন্নাস্বামীতে ঝড় তোলার চেষ্টা করেন। এই দুই আফগান ব্যাটার ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলে ভারতকে চাপে ফেলে দেন, তবে ফের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন ওয়াশিংটনই। ৩৪ রানে মহম্মদ নবীকে আউট করলেন ভারতীয় এই অলরাউন্ডার।
২ রানে করিম জনাতকে দুরন্ত রান আউট করলেন সঞ্জু স্যামসন। নাজিবুল্লাহ জাদরানকে ৬ রানে আউট করলেন আবেশ খান। দুরন্তভাবে ক্যাচ তালুবন্দি করলেন কোহলি। এই ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে কিন্তু নজর কাড়লেন বিরাট।
ব্যাট হাতে ভারতকে চাপে ফেলে দিলেন গুলবাদিন। ২৩ বলে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন এই আফগান ব্যাটার। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। রোহিত বল হাতে তুলে দেন বাংলার মুকেশ কুমারের হাতে। জেতাতে না পারলেও হারালেন না। নির্ধারিত ২০ ওভারে আফগানিস্তানের রানও ২১২। ফলে ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে।
সুপার ওভারে বল করেন সেই মুকেশ কুমার। প্রথম বলেই কোহলির থ্রোয়ে রান আউট হলেন গুলবাদিন।শেষ পর্যন্ত নবী ৭ এবং গুরবাজ ৫ রানের সৌজন্যে ১ ওভারে ১৬ রান তুলল আফগানরা।তবে ৪ রান হল অতিরিক্ত।৬ বলে জিততে হলে ভারতের দরকার ছিল ১৭ রান। ব্যাট করতে নামেন রোহিত এবং যশস্বী। ৫ বলে ১৫ রান তোলে ভারত। এই সময় মাঠ ছাড়েন রোহিত। তার জায়গায় নামেন রিঙ্কু।
কিন্তু ভারতও ১৬ রানে করে। ফলে খেলা গড়ায় ফের সুপার ওভারে। ফের ব্যাট করতে নামেন রোহিত। তঁাকে সঙ্গ দেন রিঙ্কু সিং। ১৯০ রানের পার্টনারশিপের পর ফের ব্যাট হাতে নামতে হয় দুই জনকে।১১ রানে আউট হলেন ১১ রানে। রিঙ্কু ০ রানে আউট হলেন নামেন সঞ্জু।
জিততে হলে আফগানকে করতে হত ১২ রান। নবীর সঙ্গে গুরবাজ নামেন ব্যাট হাতে। বল করেন রবি বিষ্ণোই। প্রথম বলেই আউট করলেন নবীকে। এরপর গুরবাজ আউট হতেই জয় পায় ভারত।
বেঙ্গালুরুতে সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ টি২০ আন্তর্জাতিকে ভারত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান তুলল। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪.৩ ওভারে ২২ রানে চার উইকেট হারিয়ে। বিরাট কোহলি ০ রানে আউট হলেও এই ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন রোহিত শর্মা এবং রি্কু সিং। তাঁদের জুটিতে ভর করেই স্কোর বোর্ডে বড় রান তুলল ভারত। ১৯০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে রোহিত ১২১ ও রিঙ্কু ৬৯ রানে অপরাজিত রইলেন।
চলতি সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন রোহিত। বুধবার সেঞ্চুরি করে দুটি ম্যাচের ব্যর্থতা কাটালেন। টি ২০ ম্যাচে মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছেন হিটম্যান। এমন কৃতিত্ব বিশ্বের বাকি ব্যাটারদের নেই। দুরন্ত সেঞ্চুরি করলেন রোহিত শর্মা। এ দিন ১১টি চার এবং ৮টি ছয়ের সাহায্যে ৬৯ বলে অপরাজিত ১২১ রান করেছেন তিনি।
এই ম্যাচ জিতে ধোনির অধিনায়ক হিসাবে ৪২টি ম্যাচে জয় পাওয়ার রেকর্ড স্পর্শ করলেন রোহিত।