সূর্য চট্টোপাধ্যায়, নদীয়া: শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক প্রধানমন্ত্রী ধনজন যোজনার পাসবই খোলে বহু গ্রাহক।  আর সেই খেটে খাওয়া গরীব লোকেদের পাসবই থেকে টাকা উধাও। নেপথ্যে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক শাখা।

সেই শাখা থেকে অনুমোদিত কিছু এজেন্ট এই টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে তাঁদের একাউন্টে জমা হবে বলে নিয়ে আসে কিন্তু কিছুদিন পর গ্রাহকরা টাকা তুলতে এলে জানতে পারেন যে, তাঁদের একাউন্টে টাকা জমা করে আবার তুলেও নিয়েছে সংশ্লিষ্ট এজেন্টরা।

সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা তছরূপ হয়েছে এই শান্তিপুর স্টেট ব্যাংকের শাখা থেকে যা সবই গরীব খেটে খাওয়া মানুষের টাকা। এই বিষয় নিয়ে একমাত্র শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য্য-কেই প্রথম থেকে লড়তে এবং প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

প্রথম দফায় তাঁরই উদ্যোগে কিছু মানুষ তাঁদের টাকা ফেরৎ পান। বেশির ভাগ মানুষের টাকা ফেরৎ দিতে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক অস্বীকার করে এবং একের পর এক তারিখ দেওয়া হয় গ্রাহকদের।

তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় আজ দুপুর ৩.০০ টে থেকে বিধায়ক অরিন্দম শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক দ্বারা প্রতারিত গ্রাহকদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংকের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। সকল গরীব গ্রাহকদের তিল তিল করে জমানো টাকা অবিলম্বে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংককে ফিরিয়ে দিতে হবে এই দাবি নিয়েই আজ বিধায়কের বিক্ষোভ কর্মসূচী। শান্তিপুর স্টেট ব্যাংককে সরাসরি চোর বলেও তিনি আখ্যা দেন। শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক যদি অবিলম্বে গ্রাহকদের সব টাকা ফিরিয়ে না দেয় তবে কাল সকাল ১০ টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁর নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুরু হবে বলেও শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক কতৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য্য।

কারোর ৬৫,০০০ হাজার টাকা, কারোর আবার ৪০,০০০ টাকা, কেউ কেউ আবার শাড়ির বুটি কেটে ২০,০০০ টাকা জমিয়েছিলেন, এক বৃদ্ধ গ্রাহক তো এই বিষয় বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন।

তাঁর খুব কষ্ট করে জমানো ১৫,০০০ টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিছুতেই ফেরৎ দিচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ তাঁকে আজ না কাল, কাল না পরশু এই ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁর সাথে অমানবিক আচরণ করছে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক শাখার কর্তৃপক্ষ।

আজকের এই প্রতিবাদ ও আন্দোলনে বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য্যের সাথে ছিলেন শান্তিপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র, দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর বিভাস ঘোষ, ইয়ারআলি মল্লিক এছাড়াও আরও অনেকেই। এই বিষয়ে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংকের চিফ ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে গেলে দেখা যায় তিনি ব্যাংকে নেই তাই তাঁকে পাওয়া যায়নি। আগামী দিনে শান্তিপুর স্টেট ব্যাংক গরীব খেটে খাওয়া মানুষের টাকা যথাযোগ্য ভাবে ফিরিয়ে দেয় কিনা সেই দিকেই আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here