তারাশঙ্কর গুপ্ত, বাঁকুড়ার:শীত পড়তে না পড়তেই নানা রকম সব্জিতে ভরে গেছে বাজার। আপনার রসনা তৃপ্তির জন্য বাজার সব্জিতে পরিপূর্ণ। কিন্তু এই সোনার ফসল যারা ফলালেন তাদের মাথায় হাত। বাঁকুড়ার নিত্যানন্দপুর হলো সব্জি চাষের এক অন্যতম জায়গা।
মূলত সব্জি চাষই এখানের চাষীদের মূল রুজিরুটি।কিন্তু এবার একেবারেই দাম নেই সব্জির। প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে চাষীদের।
নিদারুণ কষ্টে ভুগছেন তারা। কেউ কেউ বাজারে সব্জি নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ তারা হয়তো ভ্যান ভাড়াটুকুও মেটাতে পারবেন না ।কোন কোন চাষী আবার বলছেন এভাবে চলতে থাকলে আমাদেরকে হয়তো চাষ করাই বন্ধ করে দিতে হবে। এক চাষী তারাপদ বাগ্দী বলেন যে আমরা গতবারে কফি চাষ করে এক একটা কফির দাম পেয়েছিলাম কুড়ি টাকা ২৫ টাকা করে ।এবারে তার দাম মোটে চার টাকা পাঁচ টাকা। একদিকে সারের দাম বাড়ছে বিষের দাম বাড়ছে ।লেবারের খরচা দিতে পারছিনা।
মহাজনকে টাকা দিতে পারছি না ।আমাদের চলবে কেমন করে ?এই সব্জি চাষের ওপর আমাদের সারা বছর চলে। আমাদের খাওয়া-দাওয়া ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা সবই সব্জি চাষের উপর চলে। এখন যদি সবজির দাম না পাই তাহলে আমরা কি করব ভেবে পাচ্ছি না ।অপর এক চাষী সুনীল বাগ্দী বলেন এবারে একেবারেই কোন সবজির দাম নেই। না কফির দাম আছে না বেগুন এর দাম আছে। এখন আমরা কোথায় যাই। জমি থেকে সব্জি তুলতে পারছি না। লেবার খরচ দিয়ে মোটেই পোষাবে না । পাল্লা দিয়ে সব কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে সারের দাম বিষের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু আমরা জমি চাষ না করে করব কি? অন্য কাজ তো করতে পারব না। তাই ক্ষতি হলেও চাষ করতে হচ্ছে। কিন্তু জানিনা এভাবে কতদিন চালাতে পারবো।
নিত্যানন্দপুর মিনি মার্কেটের এক সব্জি আড়ত মালিক উত্তম রায় বললেন চাষিরা সত্যিই ক্ষতির মুখে পড়ছে। কোন রকম সবজির দাম নেই। বেগুনের দাম নেই কফির দাম নেই ।
পাইকাররা আমাদের টাকা দিতে পারছেন না ।কিভাবে তারা এই ব্যবসা চালিয়ে যাবেন আমরাই বা কিভাবে ব্যবসা চালাবো। আগামী দিনে এরকম চলতে থাকলে চাষিরা চাষ করাই বন্ধ করে দেবে। কেউ কেউ মনে করছেন এবার ফলন বেশি হয়েছে। তার সাথে আমদানি ও বেশি। তাই দাম নেই। এই অবস্থায় সরাসরি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে আছেন অসহায় চাষীরা।