গৌরনাথ চক্রবর্তী, কাটোয়া : মা কালী নানা রূপে, নানা নামে পুজো পেয়ে আসছেন। কালীসাধকদের ভাবনা অনুসারে রক্ষাকালী, শ্মশানকালী, রটন্তীকালী, ভদ্রকালী — এই রকম নানারূপে তিনি পূজিতা হন।
মহামারী, অনাবৃষ্টি বা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেতে মানুষ রক্ষাকালী পুজো করে। জাতপাতের ভেদাভেদ ভুলে পূর্ব-বর্ধমানের কাটোয়ার আমডাঙ্গায় রক্ষাকালী পুজোয় মেতে উঠলেন বাসিন্দারা। দাসদের সঙ্গে এখানে পুজোয় ঊচ্চবর্ণের মানুষজনও সামিল হন।
মঙ্গলবার সেই ছবিই দেখা গেল কাটোয়া ২নং ব্লকের জগদানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আমডাঙ্গা গ্রামের দাসপাড়ার রক্ষাকালীতলায়। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের মঙ্গলবার এই পুজো চলে আসছে। এখানে রক্ষাকালীর কোন মূর্তি নাই।ঘটে পূজিত হন মা রক্ষাকালী।
প্রায় ৩০০-৪০০ বছরের প্রাচীন এই পুজো।মনস্কামনা পূরণের জন্য ছোট-বড় সকল ভক্তরা দণ্ডী খাটেন। এখানে ছাগ বলি প্রথা বর্তমান। বেলা বারোটার পর পুজো শুরু হয়। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত পুজো শেষ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতেই রান্না বসে না। পুজো শেষ হওয়ার পর রান্না বসে।
এই সময় বাড়িতে আত্মীয় স্বজনের আগমন ঘটে প্রতি বাড়িতেই। আগে মন্দির ছিল না।বর্তমানে মায়ের স্থাপিত বিশাল মন্দির রয়েছে।বুধবার কবি গান অনুষ্ঠিত হবে। গ্রামের বাসিন্দা পদ্মলোচন গাঙ্গুলী জানালেন,”এই পুজো দাসেদের। আগে দাস ছাড়া কেউ পুজো দিত না ও কেউ প্রসাদও গ্রহন করত না। বর্তমানে ঘোষ, ব্রাহ্মণ সহ সব ঊচ্চবর্ণের মানুষই পুজো দেন। এখন সর্বজনীন পুজোয় পরিণত হয়েছে।” পুজোকে কেন্দ্র করে মাতোয়ারা গ্রামবাসীরা।