বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
সংসদের ভিতরে দর্শক আসন থেকে লাফ দিয়ে নেমে সাংসদদের লক্ষ্য করে হলুদ স্প্রে করার ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা করল দিল্লি পুলিশ। ২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার বার্ষিকীর দিন বুধবার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে।
বুধবার সংসদে তখন জিরো আওয়ার শেষ হতে পাঁচ-ছয় মিনিট বাকি। সেই সময় হঠাৎ দুই ব্যক্তি দর্শক আসন থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং তাদের জুতোর ভিতর থেকে স্মোকক্যান বের করে ধোঁয়া দিয়ে আক্রমণ করে। সেই সময় লোকসভার মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সাংসদরাও আগন্তুকদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
তবে এই স্মোকক্যান নিয়ে হামলা শুধু সংসদের ভিতরেই নয়, বাইরেও ছিল দুজন। দিল্লি পুলিশ পরে চারজনকে গ্রেফতার করে। এই হামলায় কোনও সংসদ সদস্য আহত না হলেও, নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের দলে মোট পাঁচজন ছিল। এরে তিন দিন আগে নিজেদের বাড়ি থেকে গুরুগ্রামে আসে এবং সেখানে বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এরপর বুধবার তাদেরই দুজন সংসদ ভবনের ভিতরে ঢোকে এবং বাইরে দুজন অপেক্ষা করতে থাকে।
প্রতিবাদ করার সময় সংসদ ভবনের পরিবহণ ভবনের বাইরে থেকে যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হল নীলম (৪২) এবং অমল শিন্ডে (২৫)। এছাড়াও গুরুগ্রামের ললিত ঝা নামে এক ব্যক্তি দিল্লি পুলিশের নজরে রয়েছে। সেই এই হামলার পঞ্চম ব্যক্তি।
পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদকারী দিল্লি পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, পাঁচজনই ভগত সিং ফ্যানস ক্লাব নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের অংশ। গত একবছর ধরে একে অপরকে চিনত বলে জানিয়েছেন তিনি।
সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন চলাকালীন, ডি মনোরঞ্জন এবং অমল শিন্ডিসহ তিনজিন রেইকি করেছিল। বুধবার সংসদ ভবনের আগন্তুকরা জানতো, সংসদের দর্শক আসন থেকে লাফ দিলে নিজেদের কোনও ক্ষতি হবে না।
দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সাগর শর্মা ও ডি মনোরঞ্জন যে পাস নিয়ে সংসদে প্রবেশ করেছিল, তা দিয়েছিলেন মহীশূরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমা। এক্ষেত্রে মনোরঞ্জনের পরিবার সাংসদ সিমাকে চিনত। তবে বর্ষাকালীন অধিবেশনে এরা কোন পাশ নিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করেছিল তা স্পষ্ট নয়।
বুধবার সংসদ ভবনের গণ্ডগোলের তদন্ত করে দিল্লি পুলিশ ইউএপিএ ধারার অধীনে মামলা নথিভুক্ত করেছে। এছাড়াও দিল্লি পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট তদন্তের জন্য বিশেষ সেল গঠন করেছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা একে দেশ বিরোধী হিসেবেই দেখছে।
অন্যদিকে এই ঘটনার তদন্তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এসআইটি গঠন করা হয়েছে। ডিজি সিআরপিএফের নেতৃত্বে এই এসআইটি গঠন করা হয়েছে।