বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক ::
কোচবিহারের সভা থেকে রাজবংশী ভোট টানার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। উত্তরবঙ্গ জুড়ে নিজেদের জমি ফিরে পেতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। সেজন্যই কি রাজবংশীদের জন্য এবার আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কোচবিহারে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। সেখানেই তিনি বড় ঘোষণা করলেন। ২১০ টি স্থানীয় রাজবংশী স্কুল রয়েছে এখানে। সেই স্কুলগুলি রাজ্য সরকারের অধীনে আনার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তাই নিয়েই শুরু হয়ে গেল জোর চর্চা।
রাজবংশী ভোট পাওয়ার জন্য এটা কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার্স স্ট্রোক? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি একতরফা ভোট পেয়ে লোকসভা আসন জিতে নিয়েছিল। কার্যত শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে।
আর কয়েক মাস বাদেই লোকসভা নির্বাচন। রাজবংশী ভোট পাওয়ার লক্ষ্যে মরিয়া বিজেপি ও তৃণমূল। বিজেপি এর আগে রাজবংশী ভোট পাওয়ার জন্য বিস্তর জনসংযোগ করেছে। এবারও উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ভোট পাওয়ার জন্য যথেষ্ট আশাবাদী গেরুয়া শিবির। সেখানেই নতুন বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কোচবিহারে সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে রাজবংশীদের জন্য বিশেষ বার্তা দিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজবংশী স্কুলগুলিকে সরকারের আওতায় আনার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। ২১০ টি স্কুলকে সরকারের আওতায় আনা হবে। এই বক্তব্য ভোটব্যাঙ্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এমন মত রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের।
একসময় উত্তরবঙ্গে রাজবংশী ভোট বাম কংগ্রেস শিবির থেকে তৃণমূলের দিকে যায়। তবে সেই ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া করে জোড়া ফুল। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের রাজবংশী ভোটের বড় অংশ বিজেপি শিবিরে চলে গিয়েছিল। আর তাতেই গেরুয়া ঝড় দেখা যায় উত্তরবঙ্গে।
ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচন অনেকটাই অক্সিজেন দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। বিজেপির কাছ থেকে তৃণমূল সেই আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। এবার ধূপগুড়িকে মহকুমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রতিশ্রুতিতেই তৃণমূল কংগ্রেস ওই আসন জিতে নেয়। বিজেপির কাছে এটি ছিল জোর ধাক্কা।
রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্যরা উত্তরবঙ্গে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। রাজবংশী সহ অন্যান্য দলিত ভোট পেতে মরিয়া রয়েছে বিজেপি। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন মাস্টার স্ট্রোক দিলেন। এমনই মত রাজনৈতিক মহলে। রাজবংশী ভোট যে দলের কাছে যাবে, তারাই শেষ হাসি হাসবে। বরাবর উত্তরবঙ্গে এই চল রয়েছে। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্প ও বার্তা প্রচার করতে চাইছে তৃণমূল।
তৃণমূল নেত্রীর প্রচার ঘিরে রাজবংশীদের মধ্যেও উৎসাহ আসবে। তৃণমূলের দিকে ফের রাজবংশীরা ঝুঁকবেন। সেই মত বাংলার শাসক শিবিরে। সেতু, সড়ক পথ সহ পড়ুয়াদের জন্য হোস্টেল। একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে বার্ধক্যভাতা নিয়েও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে কোচবিহার এয়ারপোর্ট করা হয়েছে। এছাড়াও মন্দির সংস্কার করার জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।