বেঙ্গল ওয়াচ ডেস্ক ::তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার আদালতে পর একের পর এক চমক দিয়ে চলেছে ইডি।
কুন্তলের দুটি অ্যাকাউন্টে সাড়ে ৬ কোটি টাকার হদিশ দিয়েই তারা ক্ষান্ত নয়, শুক্রবার আদালতে ইডি দাবি করে, ২৫০ ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে কুন্তলের ফ্ল্যাটে।
বিস্ময়ের শেষ এখানেই নয়, ইডির আইনজীবী জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ওএমআরশিটগুলি ২০২২-এর টেট পরীক্ষার। এর আগে ইডি দাবি করেছিল, কুন্তলের বাড়ি থেকে ৩০টি ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এদিন বিস্ফোরক দাবিতে তিনি জানান, ২৫০টি ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে কুন্তলের ফ্ল্যাটে।
মাত্র দেড় মাস আগে যে পরীক্ষা হয়েছিল সেই ২০২২-এর ডিসেম্বরে টেটের ওএমআর শিটগুলি কীভাবে এল নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের ফ্ল্যাটে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যায়। সেইসঙ্গে ওয়াকিবহালমহল জানিয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টেটের ওএমআর শিট উদ্ধার হওয়ায় স্পষ্ট যে, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চললেও থেমে থাকেনি চক্রান্ত।
এদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুন্তল ঘোষের জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে ইডির তদন্তকারীরা তাঁকে জেরা করতে পারবেন, সেই সম্মতি দিয়েছে আদালত। ইডি তাঁকে জেরা করে ওএমআর শিট নিয়ে বিশদে জানার চেষ্টা করবে। কী করে তাঁর বাড়িতে ২০২২ সালের ওএমআর শিট এল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।
আদালতে ইডির আইনজীবী জানান, ২০২২ সাল থেকে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে রাজ্যে সক্রিয় রয়েছে সিবিআই ও ইডি। তা সত্ত্বেও বেআইনি নিয়োগের জাল বোনার কাজ অবাধে চলছে রাজ্যে। আর তার প্রমাণ হল সদ্য ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হওয়া প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট ধৃত তৃণমূল যুব নেতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া।
একই দিনে কুন্তলের অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকা ও ফ্ল্যাটে ২৫০-রও বেশি ওএমআর শিট পাওয়া নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন ইডির আইনজীবী। শুধু এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়াতেও টাকা ঢেলেছিলেন বলে দাবি। তিনি মিউজিক ভিডিও তৈরি করেছিলেন। এবং যৌথ পার্টনারশিপে তিনি এই ব্যবসায় নেমেছিলেন।
এদিন আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়, কুন্তল ঘোষ ১৩০ প্রার্থীর কাছে থেকে ৮ লক্ষ টাকা করে তুলেছিলেন চাকরি করে দেওয়ার নামে এবং ১২০০ প্রার্থীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে তুলেছিলেন আদালত থেকে নিয়োগপত্র পাইয়ে দেওয়ার নাম করে। মোট ৩০ কোটি টাকা তিনি তুলেছেন বলে প্রমাণ আছে বলেও দাবি করে ইডি।
ইডি জানতে চায় কার সঙ্গে পার্টনারশিপে তিনি মিউজিক ভিডিও তৈরির করার কাজ শুরু করেছিলেন। এইভাবেই একাধিক অভিযোগ সামনে উঠে আসছেন কুন্তলের বিরুদ্ধে। যদিও কুন্তলের আইনজীবীর দাবি, বাড়ি থেকে কোনও টাকার হদিশ মেলেনি। অ্যাকাউন্টে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তা কুন্তল ঘোষের ব্যাবসার। তার যথাযথ প্রমাণ পেশ করা হবে বলে জানান তিনি। আর ওএমআর শিট উদ্ধার প্রসঙ্গে বলেন, আরটিআই করে ওই ওএমআর শিট পেয়েছিলেন তিনি। ইডির আইনজীবীরা তা জানতে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়ে জেরা করবে কুন্তলকে।