বেঙ্গল ওয়াচ ডেস্ক ::২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূলের প্রথম এগারোটা বছর কেটে গিয়েছে কার্যত অপ্রতিরোধ্য ভাবেই।
এই সময়ের পরে জেলে গিয়েছে দোর্দণ্ডপ্রতাপ অনুব্রত মণ্ডল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। তারপরেই যেন জেলায় জেলায় গ্রামবাসীদের মনে সাহস জাগছে। দিদির দূত কর্মসূচিতে বেরিয়ে এসে সরকারি সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। এর জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতারা অস্বস্তিতে পড়লেও, শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন জেলার তথা অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব। আলাদা করে সেই সব কর্মসূচির নামও দেওয়া হচ্ছে। বাঁকুড়ার সিমলাপালে কর্মসূচির নাম ‘অঞ্চলে একদিন’। সেখানে মূল কর্মসূচি ‘দিদির দূত’-এ হাজির হয়েছিলেন বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। তিনি গিয়েছিলেন, সিমলাপালের দুবরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুটিয়াদহ গ্রামে। সেখানকার গ্রামবাসীরা অবশ্য তাঁকে ‘স্যার’ সম্বোধন করেন। তাঁরা রাসায়নিক সারের দাম বৃদ্ধি, চাষের ও পানীয় জলের সমস্যার বিষয়-সহ এলাকার নামা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু একাধিক সমস্যা আর প্রশ্নের মুখে পড়ে মেজাজ হারান তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
আঙ্গুল উঁচিয়ে, হুমকির সুরে বিধায়ক ওই গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ডোন্ট কাম হেয়ার, ওই ধরণের কথা বলবেন না, কার সঙ্গে কথা বলছো! ওই শোনো, কথা উইড্র করো…বড় ইয়ে হয়ে গেছো না! বিধায়ককে বলতে শোনা যাচ্ছে, তিনি কি বেড়াতে এসেছেন?
তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর ওই আচরণে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষজন। পুটিয়াদহ গ্রামের রামকৃষ্ণ সিংহমহাপাত্র বলেন, এলাকার পানীয় জল-সহ অন্যা সমস্যার বিষয়ে গ্রামে আসা বিধায়ককে বলতেই উনি উদ্ধত আচরণ করেন। তাঁকে জোর করে থামিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অনেকের সামনে অপমান করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামবাসী।
এখানেই শেষ নয়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন, দাবি করে জয়ন্ত মহান্তি নামে এক ব্যক্তি বলেন, তাঁদের এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এমনকি বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীকে পানীয় জল সমস্যার কথা বললে তিনি ‘তুই শাড়ি পরে আয়’ বলে নিদান দেন বলে জয়ন্ত মহান্তি দাবি করেছেন।
এব্যাপারে বিজেপি সিমলাপাল মণ্ডল-১ সভাপতি আলোক মহান্তিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, আগের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন হিরা মাফিয়া, আর এখনকার বিধায়ক বালি-কয়লা মাফিয়া। উনি গরিব মানুষের উন্নয়ন নিয়ে কিছুই করেননি। তিনি আরও বলেছেন, মাঝে মধ্যে তিনি মুখ দেখাতে আসেন, তবে মানুষের ক্ষোভ দেখালেই মেজাজ হারান।