শ্রীজিৎ চট্টরাজ : সম্প্রতি আই সি সি আর প্রাঙ্গণে পেশায় ইন্টেরিয়র ডেকরেটর রেখা দুগ্গার প্রকাশ করলেন তাঁর প্রথম ইংরেজি উপন্যাস ফোর একর।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সফল মহিলারা ছিলেন। মুখ্য আকর্ষণ ছিলেন অভিনেত্রী ও প্রাক্তন বিধায়ক দেবশ্রী রায়।
রেখা দুগ্গাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, বড়বাজারের এক মারোয়ারি সমাজের মেয়ে হিসেবে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে আসা। এরপর সন্তান পালন।একটা সময় মনে হলো আমার ব্যক্তি অস্তিত্বের সংকট। তাই জীবনের ছোট বড় অভিজ্ঞতা কাগজ কলমে লিপিবদ্ধ করতে শুরু করি। আমি গর্বিত ,আমার স্বামী, শ্বশুরবাড়ি, শাশুড়ি , সন্তান , বোন , বোনের স্বামী , প্রত্যেকই যথাসম্ভব আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাই আজ আমার কিছু কথা আমি লিপিবদ্ধ করতে পেরেছি।
বাংলার সঙ্গে রাজস্থানের এক নিবিড় সম্পর্কের কথা ইতিহাসে আছে। বিশ শতকের গোড়ায় রাজ স্থানের জয়পুরে জন্মান জ্যোতির্ময়ী দেবী। তাঁর সাহিত্যিক জীবনে স্বাভাবিকভাবেই মরুরাজ্য রাজস্থানের মহিলাদের সুখদুঃখের কথা উঠে আসে। কলকাতাতে বাঙালি ভিড় করার আগে থেকেই রাজ স্থানের মানুষ এসেছেন রুটি রুজির তাগিদে । বলতে গেলে সম্রাট আকবরের সময় থেকেই।১৯২৯ সালের মন্দা আর বাংলা ভাগের কারণে বহু রাজস্থানী মারোয়ারী সমাজ কলকাতায় এসে স্থায়ী হন। প্রদীপ চাঁদ দুগারের কলম তাই বলছে।কলকাতাতেই জন্ম রেখার। রক্ষণশীল পরিবারের সন্তান হলেও কলকাতার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল রেখা দুগারকে নিজের ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
রেখা তাঁর প্রথম উপন্যাসে লিখেছেন ১৫ জন সদস্যের এক মারোয়ারী বাজোরিয়া পরিবারের কথা ।vপরিবারের সদস্য অনুসারে তাঁদের বাড়ি ছিল সংকীর্ণ। তবু সম্পর্কের সুবিন্যাসে দিন কাটছিল। ছন্দপতন ঘটল যখন পরিবারের মূল চরিত্র দুজন রাধেশ্যাম ও আনন্দ দুর্ঘটনায় তাঁদের পা হারান।বিষয়টিকে সাংকেতিক ধরে নিলে বলা যায়, পরিবারের শেকড় আলগা হয়ে যাওয়া। ফলে পরিবারে ছোটদের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এমন এক মুহূর্তে বাড়ির বৌমা রিয়া তাঁর আর্কিটেক ভাই আয়ুষ্মানকে সিঙ্গাপুর থেকে কলকাতায় নিয়ে আসে গৃহ নির্মাণের কারণে। সে কলকাতায় এসে জানতে পারে সে কেবল একা নয়, আর এক আর্টিকেট মিত্তলও পরিকল্পনা দেবে। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে আয়ুষ্মান তাঁর দুই প্রিয় বন্ধু বিশ্বজিৎ ও জ্যাকিকে সঙ্গে নেয়। শেষ পর্যন্ত কি তাদের পরিকল্পনায় বাজোরিয়া পরিবারের বাড়ি তৈরি হবে, না খ্যাতিমান মিত্তলের পরিকল্পনা নির্বাচিত হবে? জানতে পড়তে হবে রেখা দুগ্গারের প্রথম উপন্যাস ফোর একর।