নিজস্ব সংবাদদাতা নদিয়া: অতিরিক্ত পনের দাবীতে স্ত্রী কে প্রথমে ব্যাপক মারধর ও পরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে গ্ৰেপ্তার হওয়া গুণধর স্বামী বাপি ঘোষ ও বধূর শাশুড়ির সন্ধ্যা ঘোষের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল নবদ্বীপ আদালতের বিচারক।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের বাড়ী নবদ্বীপ পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ঢাকা নগর কলোনীতে। বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বছর আড়াই আগে আলিপুরদুয়ার জেলার হাঁসপুকুরিয়া থানার ফালাকাটার বাসিন্দা, পেশায় প্লাইউড কারখানার কর্মী কানু রায়ের একমাত্র মেয়ে, বন্দনা রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় নবদ্বীপ ঢাকানগর কলোনীর বাসিন্দা যুগল ঘোষের ছেলে বাপী ঘোষের সঙ্গে।
তাদের দশ মাস একটি পুত্র সন্তান আছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে অতিরিক্ত পনের জন্য ওই গৃহবধূর ওপর নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গৃহবধূর বাবা কানু রায় অভিযোগ করেন চলতি মাসের ১২ তারিখে গৃহবধূর স্বামী বাপি ঘোষ তার শাশুড়ী সন্ধ্যা ঘোষ ও শ্বশুর যুগল ঘোষ তিনজন মিলে অতিরিক্ত পনের জন্য বন্দনার ওপর ব্যাপক অত্যাচার চালায়।
পরে বিকেল ৫ টা নাগাদ তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ বন্দনার আর্তচিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। পরে তারাই ওই বধূ কে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে অগ্নিদগ্ধ বধূর চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,বেশি রাতে বন্দনার অবস্থার অবনতি হলে, তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়।
এদিকে প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থেকে নবদ্বীপে ছুটে আসে বন্দনা দেবীর পরিবার। সোমবার দুপুরে মূল অভিযুক্ত বাপি ঘোষ সহ তিনজনের নামে নবদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বন্দনা দেবীর পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। তদন্ত চলাকালীন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একটি গোপন ডেরা থেকে মূল অভিযুক্ত বন্দনা দেবীর স্বামী বাপি ঘোষ ও বধূর শ্বাশুড়ি সন্ধ্যা ঘোষ কে গ্ৰেপ্তার করে পুলিশ। অপর অভিযুক্ত বধূর শ্বশুর যুগল ঘোষ পলাতক বলে জানায় পুলিশ। ধৃত স্বামী বাপি ঘোষ এবং শাশুড়ি সন্ধ্যা ঘোষকে নবদ্বীপ আদালতে তোলা হলে, আদালতের বিচারক তাদের দুজনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।