পূর্ব প্রত্যাশা মতোই সোমবার কলকাতার মহানাগরিকত্ব পেলেন ফিরহাদ হাকিম। কেবল একজন অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকায় মোট ১২২ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের মধ্যে ১২১ জন কাউন্সিলরের ভোট গেল ফিরহাদের দিকেই। ভোট দিলেন প্রাক্তন মেয়র তথা দলীয় সহকর্মী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।
অন্যদিকে বিজেপি তাদের ৫ কাউন্সিলরের ৫টি বাদে আর একটিও ভোট পেল না। আবার, একপ্রকার নিরুপায় হয়েই ভোট বয়কট করল সিপিএম ও কংগ্রেস।
গতকাল শপথ গ্রহণ করেই ফিরহাদের স্পষ্ট বার্তা, ‘ধর্ম নয়, কর্মই হোক আমার পরিচয়।’ অর্থাৎ মেয়রের পদে বসে ধর্মের রাজনীতি নয়, তাঁর লক্ষ্য হবে স্রেফ কাজ করে যাওয়াই। মেয়রের কুর্সিতে বসেই ফিরহাদ তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিজেপিকে বার্তা দিয়ে বলেন, ‘কোনও ক্রস ভোটিং হয়নি। ফলে এই পরাজয় আসলে বিজেপির নৈতিক পরাজয়ও। ওদের এবার বাংলা ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।’
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার ওপর বিশ্বাস করে তিনি যে দায়িত্ব আমায় দিয়েছেন, আমি তা যথাযথভাবে পালন করব। আমরা সকলেই তৃণমূলের সৈনিক। মমতাদির স্বপ্নকে সার্থক করে তুলতে হবে আমাদেরই। তাই সকলকে নিয়ে কাজ করব। মেয়রের কুর্সির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও ভোলেননি ফিরহাদ। তাঁর কথায়, ‘এই চেয়ারে একসময় মনীষীরা বসেছেন। এই চেয়ারের মর্যাদা আমাকে রাখতে হবে।’
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর মহাকরণ থেকে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে পুরসভায় আসেন ফিরহাদ। দোতলায় পুরসভার অধিবেশন কক্ষে ঢুকতেই উপস্থিত কাউন্সিলররা তাঁকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান। চেয়ারম্যান মালা রায় ফিরহাদকে শপথবাক্য পাঠ করান। পাশেই ছিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। পুষ্পস্তবক দিয়ে অভিনন্দনকারীদের এদিনও ফিরহাদ বলেন, ‘ফুল-মিষ্টির জন্য টাকা খরচ না করে সেই অর্থ মেয়রের ত্রাণতহবিলে দিন।’
পুরসভায় যাওয়ার আগে মহাকরণে ফিরহাদ বলেন, ‘সকালে নিজের কেন্দ্রে থাকব। প্রতিদিন বেলা ১টা থেকে ৪টে পুরসভায় বসব। তারপর যাব মহাকরণে। আমার দরজা আগের মতোই সকলের জন্য খোলা থাকবে।’ আর পুরসভায় বলেন, ‘একা কোনও সিদ্ধান্ত নেব না। সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করব। ক্রমাগত বাংলার উন্নয়ন করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমি তাঁর দেখানো পথেই হাঁটব। তাঁর হাত আরও শক্ত করতে হবে।’