মাধব দেবনাথ, নদীয়া : প্রেমিকার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে অসুস্থ হয়েও শেষ পর্যন্ত প্রেমিকার সাথে বিয়ে হয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলার অনন্ত বর্মণের। এলাকার লোকেরা পাশে এসে দাঁড়ানোয় অনশন মঞ্চ থেকে সোজা বিয়ে করে প্রেমিকা লিপিকাকে বাড়ি নিয়ে যায়। আর অনন্তের সেই প্রেমিকাকে বিয়ের জন্য তার বাড়ির সামনে অনশনের খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তবে নদিয়ার তেহট্টের বাহাদুরপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার বাড়ির সামনে অনশনে বসতে গিয়ে প্রেমিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল কলেজ ছাত্রী প্রেমিকার পরিজনদের বিরুদ্ধে৷ ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার তেহট্টের বাহাদুরপুর গ্রাম৷ প্রেমিকের পরিবারের অভিযোগ, যুবতী সম্পর্কের কথা অস্বীকার করার পরই প্রেমিকার পরিজনেরা তাকে বেধড়ক মারধর করে৷ তাকে মারধরের জেরে গুরুতর অসুস্থ হয় প্রেমিক৷ প্রহৃত ওই যুবক নাজিরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি৷ ঘটনার তদন্তে নেমেছে তেহট্ট থানার পুলিশ৷
নদিয়ার তেহট্টের বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা রিম্পা সরকার বেতাই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী৷ ইলশেমারি এলাকার বাসিন্দা প্রাণতোষ বিশ্বাসের দাবি, রিম্পার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার৷ কিন্তু ইদানীং রিম্পা তাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলেও দাবি ওই যুবকের৷ যদিও রিম্পার বাড়ির লোকজন প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছে৷ ইতিমধ্যেই শুক্রবার সকালে প্রাণতোষ হাজির হয় রিম্পার বাড়ির সামনে৷ সঙ্গে প্রাণতোষের পরিজনেরাও ছিলেন৷ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ধূপগুড়ির বাসিন্দা অনন্ত। ঠিক যেমন তার প্রেমিকার জন্য ধরনায় বসেছিল তেমনই প্রাণতোষও একই কাজ করবে৷ এক্কেবারে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রেমের দাবি নিয়ে রিম্পার বাড়ির সামনে ধরনায় বসতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি৷ রিম্পার সঙ্গে প্রাণতোষের প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না, তা নিয়েই দুপক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়৷ মুহূর্তের মধ্যেই তা চরম আকার নেয়৷ অভিযোগ, রিম্পার বাড়ির লোকজনেরা প্রাণতোষের দিকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে৷ এরপর কিল, চড়, লাথি আর লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।তারপর সে ওখানেই অচৈতন্যও হয়ে যায়। তারপর তাকে তড়িঘড়ি প্রাণতোষের বাড়ির লোকজনেরাই তাকে উদ্ধার করে নাজিরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়৷ সেখানেই আপাতত চিকিৎসা চলছে ওই যুবকের৷ এই ঘটনায় সুবিচারের দাবিতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রাণতোষের পরিজনেরা৷ রিম্পার পরিবারের বিরুদ্ধে তেহট্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ হাসপাতালে প্রহৃত যুবকের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা৷ আদতে প্রাণতোষের না রিম্পার পরিজনদের দাবি সত্যি, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷