নিজস্ব প্রতিনিধি :অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার যদি দেখানো হয় তাহলে ডিজাস্টার্স প্রাইম মিনিস্টারও দেখানো উচিৎ।
আজ শুক্রবার বারাসতে যাত্রা উৎসবের মঞ্চ থেকে এভাবেই ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ সিনেমাটি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই গোটা দেশে মুক্তি পেয়েছে অনুপম খের অভিনীত ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’।
এই সিনেমা দেখানো নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন হলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। এবার সেই সিনেমা নিয়েই মুখ খুললেন মমতা। পাশাপাশি নাম না করে মোদীকে গব্বর সিং বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ঘণ্টা বাজিয়ে পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমি, রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে হওয়া বারাসতের কাছারি মাঠে যাত্রা উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যাত্রাশিল্পীদের এককালীন ভাতা ৯ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, ‘যাত্রা শিল্পীরা সসম্মানে বাঁচুক। তাই এই পদক্ষেপ’।
এরপরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজ্য সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করছে। আর কেন্দ্র বাড়ি বাড়ি চিঠি পাঠিয়ে জানাচ্ছে, ওই কাজ কেন্দ্রের টাকায় হচ্ছে। যার পুরোটাই মিথ্যে। কৃষকদের ফসলবীমা থেকে শুরু করে বছরে দু’বার একর প্রতি পাঁচ হাজার টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের কোনও হাত নেই। এমনকি রাজ্য সরকারই জনগণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে। তাও কেন্দ্র সেই কাজের স্বীকৃতি নিচ্ছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। মা–বোনেরা সুরক্ষিত নয়। কে কী খাবে? কে কোথায় যাবে? তা কেন্দ্র ঠিক করে দিতে পারে না। দেশকে ভেঙে ফেলার চক্রান্ত চলছে’।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে নিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ সিনেমার সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘বিকৃত করে সিনেমা তৈরি হচ্ছে। অ্যাক্সিডেন্টাল পিএম তো সবাই। নির্বাচনের আগে অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার নিয়ে যারা নাটক করছে তাদের আরও একটা সিনেমা দেখতে হবে। আর তা হল ডিজাস্টারস পিএম’। আগামীদিনে এই সিনেমাও দেখানো হবে বলে মনে করেন মমতা।
এরপরই পুজো কমিটিগুলিকে আয়করের তলব নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুজো কমিটিগুলিকে বলা হচ্ছে আয়কর দিতে হবে। কেউ কী আয় করার জন্য পুজো করে? এরপর কী তিরুপতি-জগন্নাথ মন্দির-সহ দেশের অন্যান্য মন্দিরগুলিকেও কী কর দিতে হবে? হয়ত পুজো করার জন্যও কর চাইবে কেন্দ্র। পরে আবার নিয়ম আনবে বাড়িতে রান্না করতে গেলে কিংবা সাংবাদিকদের ছবি তুলতে গেলেও আয়কর দিতে হবে। আমি পুজো কমিটিকে বলছি, ডাকলে তাঁরা যেন না যায়, যা বলার আমি বলে দেব। একটি ক্লাবের গায়ে হাত পড়লেও আমরা ছেড়ে কথা বলব না। এর আগে বামেরা বাংলাকে জ্বালিয়েছে আর এখন জুটেছে নাটুকে রাম। আমাদের এই সরকারের সময়ে গত সাড়ে সাত বছরে রাজ্যের প্রভূত উন্নতি হয়েছে’।
কেন্দ্রের নয়া সংরক্ষণ বিলেরও সমালোচনা করেন মমতা। বলেন, ‘কোন গরিব মানুষের আয় বছরে আট লক্ষ টাকা? মোদি জমানায় ২ কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন। একে চাকরি নেই, তার উপর আবার সংরক্ষণ’।