নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি, আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দেশপ্রেমের নামে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে রাজ্যে। পুলওয়ামা হামলার পর আজ সোমবার এই অভিযোগ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলওয়ামায় শহিদ জওয়ানদের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এদিন নবান্নে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন মমতা। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করারও নির্দেশ দেন তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কিছু কিছু লোক ষড়যন্ত্র করছে। এসএমএস ছড়িয়ে রাজ্যে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু রাজনীতির নামে দাঙ্গা করা চলবে না’। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘পুলওয়ামার ঘটনার পর বিরোধীরা সবাই চুপ করে আছেন, আর মোদী, অমিত শাহ মিটিং করে বেড়াচ্ছেন’।
মমতার কথায়, ‘জঙ্গীরা সব সময়ই জঙ্গী। তাদের বিরোধিতা করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু জঙ্গী দমনের নামে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু হয়েছে’।
গত পাঁচ বছরে জঙ্গী দমনে মোদী সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে এদিন সেই প্রশ্নও তুলেছেন মমতা। পুলওয়ামা ঘটনা নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘আগাম সতর্কতা থাকা সত্বেও কেন সেদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন একই দিকে ৭১টা গাড়ির কনভয় যাচ্ছিল?’
হামলার ঘটনার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মাঝরাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে রাস্তায় বেরোচ্ছে সঙ্ঘের লোকেরা। এগুলো সব আরএসএসের ‘গেমপ্ল্যান’।
গত জানুয়ারিতে মার্কিন গোয়েন্দাদের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতে ধর্মীয় অশান্তি তৈরি হবে। সেকথা এদিন উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘সেই পরিস্থিতিই তৈরি হচ্ছে ক্রমশ’। এই পরিকল্পনার প্রমাণও তাঁর কাছে আছে বলে উল্লেখ করেন মমতা।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট ঘিরে অশান্তি শুরু হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই ফেসবুক পোস্টের জেরে থানায় অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। অনেকের বাড়িতে গিয়ে অশান্তির ঘটনাও ঘটছে। এরপরই এই ইস্যুতে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে, তাই এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেই আর্জিই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।