বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: এ এক আশ্চর্য ডাকাতির কৌশল। না মারামারি, না হুমকি, না রক্তপাত। স্রেফ বিনয়ের আবেদন। সম্প্রতি এমন ডাকাতির সাক্ষী থাকলো দেগঙ্গার কয়েকটি পরিবার।

 

মহিলাদের মা বলে সম্বোধন করা থেকে শুরু করে অসুস্থ বোধ করলে জল এনে দেওয়া, এমনকি কাউকে আঘাত তো নয়ই, বরং স্রেফ মৃদু স্বরে হুমকি, কী না করল দুষ্কৃতীরা! ঘরে ঢুকে করজোড়ে রীতিমতো বিনয়ী ভঙ্গিতে ‘ডাকাতিতে সহযোগিতা করুন’ বলে আবেদন জানিয়েই বৃহস্পতিবার রাতে আমুলিয়ার কলাপোল গ্রামের রাস্তার ধারের দু’দিকের দুটি বাড়ি সাফ করে পালাল ডাকাতদল। যা নিয়ে রবিবার দিনভর চর্চা চলল দেগঙ্গা ব্লকের গ্রামে-গ্রামে।

ডাকাতদের আবেদন আশ্চর্য পুলিশ। তারা বুঝতেই পারছে না কোথা থেকে তদন্ত শুরু করবে! এহেন ডাকাতদের ধরতে পুলিশকে গঠন করতে হয়েছে ‘বিশেষ তদন্তকারী দল’। তাতে রয়েছেন একাধিক ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার, জেলা পুলিশের এক শীর্ষকর্তাও। গ্রামে সাধারণত সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকে না। কলাপোল গ্রামের ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ-সাতশো মিটারের মধ্যেও কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। সেই সুযোগকেই কাজে লাগায় ডাকাতদল। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটি বাইকে ছয় জন দুষ্কৃতীর নজরে আসে মৃণাল চৌধুরির বাড়ি। রাস্তার উপর এই বাড়িতে কোনও পাঁচিল নেই, গেটও ছিল খোলা। সেই সুযোগে ছয়জন বোমা-বন্দুক হাতে সোজা ঢুকে পড়ে বাড়িতে। বাড়ির মহিলাদের ‘মা’ সম্বোধন করে জানায়, কোনো রকম চিৎকার নয়, শুধু তাদের হাতে টাকা পয়সা ও গয়না তুলে দিতে হবে। ভয়ে , বিস্ময়ে তাঁরা হতভম্ব হয়ে গেলে ডাকাতদের অনুরোধ, মায়েরা মোবাইল সুইচ অফ করে দিয়ে দিন। একজন গেটে পাহারায় দাঁড়ায়, আরেকজন বিনয়ের স্বরে আলমারির চাবি নিয়ে নগদ টাকা ও গয়না লুঠ করতে শুরু করে। এরই মধ্যে বাড়িতে আসেন চৌধুরিবাড়ির সদস্য, পেশায় আইনজীবী প্রতিম। তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পাহারায় থাকা ডাকাত স্বাগত জানায়। তারপর হাতে বোমা ধরিয়ে এক জায়গায় বসিয়ে ফের ডাকাতিতে সহযোগিতা করতে বলে। সব শেষে আবার নমস্কার করে সকলে বিদায় নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *