বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:দার্জিলিংয়ের ম্যালের ধারের চেয়ারগুলি ফাঁকা। কয়েকটি মুখ দেখা গেলেও মাথাগুলি জায়গা খুঁজে নিয়েছে গাছের তলায়। প্যান্ডেল যাঁরা তৈরি করছেন, তাঁদের অনেকেই ত্রিপলের নীচে।
চড়া রোদের জন্য ছবিটা অচেনা। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শৈলরানির এমন ছবি কবে দেখা গিয়েছে, মনে করতে পারছেন না পাহাড়িয়ারা।
সমতলেও কেউ টি-শার্ট, কেউ আবার হালকা পোশাক পরে দিব্যি ঘুরছেন রাস্তায়। কোচবিহার থেকে কালিয়াচক- ছবিটা একই। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি তো সোমবার রোদের তেজে রীতিমতো পুড়েছে। কে বলবে এটা হেমন্তের দুপুর!
অগত্যা ক’দিন আগের বৃষ্টি-আবহাওয়ায় আগাম শীতের আমেজ পেয়ে যাঁরা গরম পোশাক দিয়ে দোকান সাজিয়েছিলেন, তাঁদের চোখে-মুখে চিন্তার ভাঁজ। শিলিগুড়ির শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের উল বিক্রেতা রাজু রায় বললেন, ‘শীত পড়বে না, তা নয়। আজ অথবা কাল, ঠান্ডা পড়বেই। কিন্তু আগাম মাল তোলায় টাকা আটকে রয়েছে।’ কাশ্মীর থেকে জলপাইগুড়িতে পশমিনা সহ বিভিন্ন গরম পোশাক বিক্রি করতে আসা ফিরাজ আহমেদও হতাশ। তাঁর কথায়, ‘এবছর আবহাওয়া যা দেখছি, তাতে মনে হয় না লাভ সেভাবে হবে। এখনও পর্যন্ত একটি জিনিসও বিক্রি করতে পারিনি।’
কালীপুজোর রাতের বৃষ্টিতে হুহু করে তাপমাত্রা নেমেছিল অনেকটা। হেমন্তকে কি ফাঁকি দিয়ে শীতের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, প্রশ্নও উঠে গিয়েছিল। কিন্তু দিনকয়েকের মধ্যে ফিরে এসেছে গ্রীষ্মের স্মৃতি। হিমালয় সংলগ্ন উত্তরবঙ্গে হেমন্তকেও যেন অচেনা ঠেকছে দিন-দিন।
পাহাড়ে অবশ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এবং সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে রাতের পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পাহাড় পরিস্থিতির বদল ঘটলে কি সমতল আবহাওয়ার পটপরিবর্তন হবে? কিছুটা বদল ঘটলেও আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া দপ্তর। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের ওয়েদার সিস্টেমের হেড হাবিবুর রহমান বিশ্বাস বলছেন, ‘বর্তমানে যেহেতু আকাশে মেঘ নেই, ফলে শরীরে রোদের তেজ অনুভূত হচ্ছে। গরম থেকে ঠান্ডা আসার পথে কখনও গরম কখনও ঠান্ডা অনুভূত হয়। তবে, বর্তমানে উত্তরবঙ্গ সহ জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে ২-৩ ডিগ্রি বেশি রয়েছে তাপমাত্রা।
হলে নভেম্বরের শুরুতে একেবারে অবাক করা তাপমাত্রায় অবাক জলপাইগুড়ির মানুষ।