বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক::  মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘাত আটকানো, হাতির চলাচলের করিডর সহ বন্যপ্রাণীর বাসস্থানের উন্নতি ইত্যাদি বিষয়ে প্রকল্প রূপায়ণ করতে চলেছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার ইন্ডিয়া (ডব্লিউডব্লিউএফ–আই)। তিন বছরের এই প্রকল্পে প্রথম ধাপে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলাকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

 

পাশাপাশি, ক্ষুদ্র চা বাগানে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করে চিতাবাঘ ও হাতির উপদ্রব প্রতিরোধের বিষয়ও থাকবে। আলিপুরদুয়ারের বক্সা, জলদাপাড়া থেকে গরুমারা জাতীয় উদ্যান পর্যন্ত প্রকল্পের ল্যান্ডস্কেপ তৈরি করা হবে।

শুক্রবার জলপাইগুড়িতে গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের সঙ্গে এবং শনিবার ক্ষুদ্র চা বাগানগুলির সর্বভারতীয় সংগঠনের সঙ্গে ডব্লিউডব্লিউএফ–আই’এর প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। শনিবার প্রতিনিধিদলটি জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের ডুয়ার্স এলাকা পরিদর্শন করে। আগামী এক সপ্তাহ প্রতিনিধিদল বিপজ্জনক এলাকাগুলি পরিদর্শন করবে। প্রকল্প রূপায়ণে উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগ সহযোগিতা করবে। অরিত্র খেত্রী, দীপঙ্কর ঘোষ ছাড়া অনেকেই এই প্রতিনিধিদলে রয়েছেন। প্রকল্পের প্রধান সুমিত রায়ের বক্তব্য, ‘আপাতত তিন বছরের জন্য প্রকল্প রূপায়িত হবে। মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘাত আটকানো, বিকল্প আয়, হাতির করিডরের সেফ প্যাসেজ তৈরি করা থেকে ক্ষুদ্র চা বাগানকেও পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে। বন দপ্তরকে নিয়েই প্রকল্প রূপায়িত হবে।’

‘স্ট্রেনদেনিং ল্যান্ডস্কেপ ডেভেলপমেন্ট ফর দ্য কনজারভেশন’ নামক এই প্রকল্প তিনটি ধাপে রূপায়িত হবে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় হাতির করিডর বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। লোকালয়ে ঢুকে প্রাণহানি, ফসল, বাড়িঘর ক্ষতি করছে হাতির পাল। অন্যদিকে, করিডরের মধ্যেই চা বাগান সহ অন্যান্য নির্মাণকাজ থাকায় হাতির চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তাই জঙ্গলের ভিতর খাদ্যভাণ্ডার কী অবস্থায় রয়েছে, লোকালয়ে হাতি কী খেতে আসে, আলিপুরদুয়ারের সংকোশ থেকে ডুয়ার্স হয়ে কতদূর পর্যন্ত হাতির পাল চলাচল করে এসব বিষয় প্রকল্পে থাকবে। এছাড়া লোকালয়ে ধান, ভুট্টার বিকল্প হিসেবে কী চাষ করলে ভালো উপার্জন হবে সেসব বিষয়ও থাকবে ওই প্রকল্পে। আমেরিকার ‘ইউএস এইড’ নামে একটি সংস্থা ডব্লিউডব্লিউএফ–আই’এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করবে। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ বিভাগের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি জানান, বন্যপ্রাণ এবং মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। কোথায়, কী ধরনের কাজ করা হবে সেজন্য জঙ্গল ও সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখছে প্রতিনিধিদল।

শনিবার সকালে জলপাইগুড়ির এক সরকারি বাংলোতে ওই বৈঠক হয়। ক্ষুদ্র চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডব্লিউডব্লিউএফ–আই’এর প্রতিনিধিরা। ক্ষুদ্র চা চাষ উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে জোয়ার এনেছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বাড়ির ছোট জায়গাতেও ক্ষুদ্র চা বাগান করেছে বলে জানান কনফেডারেশন অফ স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘ক্ষুদ্র চা বাগানগুলি চিতাবাঘের আবাসস্থল। এমনকি লোকালয়ে আসছে হাতির পাল। ক্ষুদ্র চা বাগানের চারপাশে লেবু ও বিভিন্ন মশলার চাষ করা সম্ভব। কৃষকরাও উপকৃত হবেন। হাতির উপদ্রবও ঠেকানো যাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *