বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে সেই টাকা দিয়ে কাগজের দুর্গা বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিল সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া বিক্রম সরকার।তার হাতে তৈরি দুর্গা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। প্রায় মাসখানেক ধরে তিলে তিলে এই দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছে বিক্রম।

 

মহালয়ার দিন সম্পূর্ণ হল তার কাজ। পুজোর ক’টা দিন এই প্রতিমাকে নিজেই পুজো করতে চায় সে। এরপর বিসর্জন না করে সেই প্রতিমাকে রেখে দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বিক্রমের।

গাজোলের সরকার পাড়া শীতলা মন্দিরের পেছনেই বাড়ি বিক্রমের। বাবা বিকাশ সরকারের সেলুন রয়েছে। মা গৌরী দাস সরকার গৃহবধূ। সেই সঙ্গে বাড়িতে ছোট্ট একটা মুদিখানা দোকানও চালান তিনি। গাজোল হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র বিক্রম। বুধবার সকালে বিক্রমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, এক মনে শেষ মুহূর্তের কাজ করছে সে। হঠাৎ করে দুর্গামূর্তি কেন গড়লে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম জানায়, ‘ছোট থেকে আঁকার উপরে আমার ভীষণ ঝোঁক। বাড়ির পাশেই এক শিক্ষকের কাছে চার বছর বয়স থেকে আঁকা শিখছি। তারপরে ৭-৮ বছর বয়স থেকে ইচ্ছে হল বিভিন্ন জিনিস তৈরি করার। সেই থেকেই তৈরি করছি। এর আগে কার্ডবোর্ড এবং কাগজ দিয়ে তৈরি করেছি রথ, জগন্নাথ দেবের মূর্তি, মনসা প্রতিমা, ছোট্ট গোপাল। তাছাড়াও এর আগে ছোট দুর্গা বানিয়েছিলাম। তবে এবার প্রায় আড়াই ফুটের এক চালা দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছি।‘ সে আরও জানায়, ‘স্কুল যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে যে টিফিনের টাকা দেওয়া হত সেই টাকা বাঁচিয়ে প্রায় ৪০০ টাকা খরচ করে তৈরি করেছি এই প্রতিমা। পুজোর কটা দিন নিজের মতো করেই পুজো করব। তারপর বাড়িতে রেখে দেব।‘ কোনও ব্যক্তি যদি নিজের সংগ্রহে রাখতে চান, তাহলে দিতে আপত্তি নেই বিক্রমের।

বিক্রমের মা গৌরী দেবী জানান, ছোট থেকেই বিক্রমের আঁকার দিকে ঝোঁক বেশি। পড়াশোনার মাঝে সময় পেলে দোকানেও বসে। ওর বয়সি ছেলেরা যখন মোবাইল নিয়ে মগ্ন থাকে, তখন বিভিন্ন জিনিস তৈরি করে বিক্রম। স্কুল যাওয়ার সময় ওকে ১০ টাকা হাতে দিই। সেখান থেকে খরচ বাঁচিয়ে নিজের টাকাতেই তৈরি করে বিভিন্ন মূর্তি। এভাবেই নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করে চলেছে বিক্রম। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ তার পাড়ার লোকেরা। সে নিজেও জানিয়েছে পড়াশোনার পাশে এই কাজটিও সে করে যাবে।। তার এই কাজ করতে ভালো লাগে। ঠাকুরের ভক্ত সেই ছোটবেলা থেকেই, এই ধরনের মূর্তি তৈরি করতে সে আনন্দ পায় বলে জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *