বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রশাসনিক সভা। তারপরেই সেখান থেকে করা সভা থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা তৃণমূলই ভরসা। নাম না করে তিনি সন্দেশখালির সঙ্গে নন্দীগ্রামের তুলনার তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেছেন, বাংলা ভিক্ষা চায় না, অধিকার চায়।
লক্ষ্মীর ভান্ডার, কৃষকভাতা, সবুজ শ্রীসহ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে, সাইকেল পেতে গেলে এবং শান্তিতে থাকতে গেলে তৃণমূল ছাড়া গতি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে পরিবারের জন্য ছিল স্বাস্থ্যসাথী। এখন পরিবারের যে সদস্য বাইরে থাকেন তাঁর জন্যও স্বাস্থ্যসাথী করে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে ঘরে ঘরে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও তিনি দিয়েছেন এদিন। সভা শেষে তিনি মঞ্চে ধামসাও বাজান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ভাষণের শুরুতেই উঠে আসে শিখদের নিয়ে মন্তব্য। তিনি বলেন, শিখদের দেখলেই বলছে খালিস্তানি। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে উঠে আসে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার দুটি আসন থেকে বিজেপির জয় প্রসঙ্গ। প্রসঙ্গত বাঁকুড়ার বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর আসন দুটিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি।
মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়াবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, দুটি আসনে তো জিতেছিল বিজেপি, জেতার পরে খোঁজ নিয়েছিল? তাঁরা কি এলাকার মানুষজনকে দেখেছে? তিনি বলেন, এবার প্রচারে আসলে ওদের গ্যাস বেলুনটা ফুঁটো করে দিতে হবে। নির্বাচন আসলেই তারা কা-কা করে। বসন্তে যেমন কোকিল আসে, ঠিক তেমনই বিজেপি নেতারাও রাজ্যে আসেন বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন খাঁতড়ার সভা থেকে একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে সরব হয়েছে। তিনি বলেছেন, ৫৯ লক্ষ মানুষককে কাজ করিয়ে নিয়ে পয়সা দেয়নি। অন্যদিকে রাজ্য সরকার তাঁতিদের দিয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জামা-কাপড় তৈরি করায়। কৃষকদের থেকে সরাসরি চালও কিনে নেয় রাজ্য সরকার। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গরিবদের বঞ্চিত করার অভিযোগও তিনি করেছেন।
এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী সারি ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন পাঠানোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আদিবাসীদের জমি দখল করতে দেব না। নন্দীগ্রামের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনার তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিঙ্গুর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নন্দীগ্রাম, সব জায়গার চেহারা আলাদা।
সন্দেশখালি নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে তিনি এদিন বলেন, কোনও ভুল জিনিসকে তিনি প্রশ্রয় দেন না। কোথাও অত্যাচার হোক, রক্ত ঝড়ুক তিনি চান না। মানুষই তাঁর ভরসা। আর মানুষ সঙ্গে থাকলে সমালোচনাকে থোড়াই কেয়ার বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কাছেও ভাণ্ডার রয়েছে। সেই ভাণ্ডার খোলার হুঁশিয়ারিও এদিন তিনি দিয়েছেন।