বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: রাস্তা দখল মুক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন মমতার সরকার। অবশ্য দিন দুয়ের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ব্যাক গিয়ের দিয়ে বলেছেন, আপাতত ১ মাস বন্ধ থাকবে অভিযান।
সে তো গেলো তাঁর ভোট বাক্সের চিন্তা। কিন্তু ইতিমধ্যে যাদের দোকানে বুলডোজার চালানো হয়েছে তারা আর বাকিরা কতটা সন্ত্রস্ত? এই নিয়েই আমরা গিয়েছিলেম কয়েকটি বিখ্যাত স্ট্রিট ফুডের স্টলে। শহরের এক কোণায় ফুটপাথ জুড়ে থাকা হোটেলই তাঁদের কর্মস্থল। নিউটাউনে আকাঙ্খা মোড়ে ‘নন্দিনীদির হেঁশেল’ হোক বা রাসবিহারি থেকে গড়িয়াহাট যাওয়ার পথে সাগরের হোটেল, ইউটিউবের দৌলতে তাঁদের জনপ্রিয়তা নামী রেস্তরাঁকেও লজ্জা পাইয়ে দেবে। বাঁশের খাঁচার উপর ত্রিপল খাটিয়ে বা টিনের শেড দিয়ে ঝুপড়ি হোটেলে লাইন লেগে যায় খাওয়ার জন্য। সকালে ধূপ-ধুনো দিয়ে হাড়ভাঙা খাটুনি চলে সারাদিন, দিনের শেষে যাতে ক্যাশ বাক্সে কটা টাকা জমা পড়ে। আর তাই দিয়েই চলে তাদেরকে জীবন ও জীবিকা।
এবার তাদের ভাবনা কি? গত দু-তিনদিনে চিত্রটা পালটে গেলে মুহূর্তের মধ্যে। নন্দিনী দিদি বলছেন, ‘দোকানটা উঠে গেলে আগামী দিনে আমরা খাব কী? কোথায় যাব? এই দোকানই তো আমাদের সব। আমাদের দিকটাও একবার ভাবা উচিত।’ যদিও সাগর মুখে অন্তত খুবই খুশি হয়েছে বলেই বললেন। সাগর বলেন, ‘প্রশাসন ভালো কিছু করার জন্যেই এটা করছে। আমরা নেগেটিভ দিক না দেখে পজিটিভ দিকটা দেখি। মুখ্যমন্ত্রী এটা ভালোর জন্যেই করছেন, যাতে পরবর্তীকালে আমরা আরও গুছিয়ে দোকানটা করতে পারি।’ কারণ মুখ্যমন্ত্রী আলাদা ফুডকোর্ট গড়ার কথা বলেছেন। প্রায় পঞ্চাশ বছরের কাছাকাছি হোটেল চালাচ্ছেন রাগী মাসিও। পুলিশের কড়া নির্দেশ এসেছে তাঁর কাছেও। দোকানের শেডের যেটুকু অংশ, তার মধ্যেই সমস্ত জিনিস রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাইরে রাস্তার ধারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা চলবে না। রাগী মাসি বলেন, ‘একমাস সময় দিয়েছে ভালো। সকলের যা হবে আমারও তাই হবে। অনেকের কাছ থেকে আমার টাকা নেওয়া আছে। হোটেল বন্ধ করলে তো চলবে না।’ এখন সকলেই শেষ দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন। তবে ক্যামেরা বন্ধ করার পড়ে এরাই বলেন, ও সব কিছুই হবে না। মুখ্যমন্ত্রীরও তো ভোটের চিন্তা আছে!