বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন আর বিধানসভা নির্বাচনে তফাত রয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান, লড়াই হবে দ্বিমুখী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তির মোকাবিলায় আগামী ২ বছরে বিজেপি কতটা গুছিয়ে নিতে পারবে তা দেখার। তবে লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুর থেকে জিতে বিধায়ক হন বিজেপির সুব্রত মৈত্র। জয়ের ব্যবধান ছিল ২৬,৮৫২। লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে এবার ৬,৯২৭ ভোটের লিড পেয়েছেন কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বিজেপি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আসনটি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর থাকবে।
করিমপুর বিধানসভাটি নদিয়া জেলায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে ২৩,৫৭৫ ভোটে এই কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হন তৃণমূল কংগ্রেসের বিমলেন্দু সিনহা রায়। এবারের লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা ক্ষেত্রে ১২,২২৩ ভোটে এগিয়ে তৃণমূল। ফলে মার্জিন কমে অর্ধেক। ফলে বিজেপির টার্গেটে এই আসনটিও।
নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ। তিনি ২০২১ সালের নির্বাচনে ২১,২৭১ ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে তৃণমূলের লিড মাত্র ৬,০৯৯। সে কারণে এই আসনটিকে নিয়েও রণকৌশল সাজাতে পারে বিজেপি।
রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে শুধু নবদ্বীপেই লিড পেয়েছে তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা জিতেছিলেন ১৮,৫৭১ ভোটের ব্যবধানে। তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও জয়ের প্রধান ফ্যাক্টর। লোকসভা নির্বাচনে এই বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূলের লিড ৫,৫৫৬। ভোট বেড়েছে বিজেপির, কমেছে তৃণমূলের। এই আসনটিও থাকছে সম্ভাব্য টার্গেটে।
বীজপুর বিধানসভায় তৃণমূলের সুবোধ অধিকারী জিতেছিলেন ১৩,৩৪৭ভোটে। সেই লিড লোকসভা ভোটে কমে হয়েছে ৯,৬৭১। এখানেও বিজেপির ভোট বেড়েছে, কমেছে তৃণমূলের। জগদ্দলে ১৮,৩৬৪ ভোটে জিতে বিধায়ক হন তৃণমূলের সোমনাথ শ্যাম। সেই মার্জিন কমে ৫,৭১৪।
ব্যারাকপুর বিধানসভায় ৯,২২২ ভোটে জিতে বিধায়ক হন তৃণমূলের রাজ চক্রবর্তী। লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূলের লিড মাত্র ৩,৪৬০। ফলে এই তিনটি বিধানসভা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনেই খেলা ঘোরানোর পরিকল্পনা বিজেপির।
রাজারহাট গোপালপুর বিধানসভা থেকে অদিতি মুন্সী ২৫ হাজার ২৯৬ ভোটে জিতে বিধায়ক হন। এই বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে তৃণমূলের লিড মাত্র ৭৪! খড়দহে তৃণমূল এগিয়ে ১০,৯৭২ ভোটে। দমদম উত্তর থেকে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জেতেন ২৮,৪৯৯ ভোটে, এবারের লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে তৃণমূলের লিড ৬৩০২।
দমদমে আরেক মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ২৬,৭৩১ ভোটে জিতেছিলেন তিন বছর আগে। লোকসভা ভোটে সেখানে মার্জিন ৯,৫৯১। সৌগত রায় নিজেই স্বীকার করেছেন এবার সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়েছে। এত ভোট বিজেপি কীভাবে পেল তা অবাক করেছে বর্ষীয়ান সাংসদকে। ফলে এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে তৃণমূল বড় চ্যালেঞ্জেই পড়বে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান।
বারাসত বিধানসভা কেন্দ্রে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী জিতেছিলেন ২৩ হাজার ৭৮৩ ভোটে। লোকসভা নির্বাচনে সেই মার্জিন ৩,১৭২। এই বিধানসভা ক্ষেত্রে বিজেপির ভোট অনেকটাই বেড়েছে। ফলে এই আসনটিও থাকছে বিজেপির টার্গেটে। মধ্যমগ্রামে রথীন ঘোষের ২০২১ সালের ভোটে জয়ের মার্জিন ছিল ৪৮,১২৬, তা এবার কমে হয়েছে ৩১,৬৫০। এখানেও বিজেপির ভোট বেড়েছে অনেকটাই। হিঙ্গলগঞ্জে ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের মার্জিন ছিল ২৪,৯১৬। লোকসভা ভোটে তা কমে হয়েছে ১০,৫০৭।