বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: জোট রাজনীতি ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বৃহৎ শক্তির সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির সমন্বয়েই জোট সরকার তৈরি হয়েছে একের পর এক নির্বাচনে।
কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপি একক ভাবে ক্ষমতা দখলের পর জোট সরকারের গুরুত্ব এক ধাক্কায় কমে যায়, একইসঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলিও রাজনীতির রাজনীতিতে তাদের কতৃত্ব বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফল জোট সরকার এবং আঞ্চলিক দল উভয়ের গুরুত্বই এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিল। দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে ফের গুরুত্ব বাড়ল আঞ্চলিক দলগুলির। শাসক হোক বা বিরোধী উভয় বেঞ্চেই থাকবেন বহু সংখ্যক আঞ্চলিক দলগুলির প্রতিনিধি।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুসারে, ৭টি রাজ্য জুড়ে আঞ্চলিক দলগুলি বড় লাভ করেছে. বিহারে, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডি(ইউ) ১২টি আসনে জিতেছে এবং বিজেপি ১২টি আসনে। লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) ৫টি আসনে এবং কংগ্রেস তিনটি এবং আরজেডি ৪টি আসনে জয় পেয়েছে। ফলে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবার মোদী সরকারের অন্যতম ভরসা। তাঁদের সমর্থন সরকারের বড় শক্তি।
ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ৩টি আসনে জিতেছে। ৩১শে জানুয়ারি হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তিনি ঝাড়খণ্ডের গভর্নরের কাছে তার পদত্যাগপত্র হস্তান্তর করেছিলেন, যিনি চম্পাই সোরেনকে তার মনোনীত স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।
আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি বিশেষত মহারাষ্ট্রে উচ্চারিত হয়েছিল যেখানে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা (ইউবিটি) এবং শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপিএসপি বড় লাভ করেছে। ২০১৯সালে, বিজেপি ৪৮ টি আসনের মধ্যে ২৩ টি জিতেছিল এবং তার মিত্র শিবসেনা ১৮ টি জিতেছিল। এই বার কংগ্রেস ১৩টি আসনে জিতেছে সেই রাজ্য।এছাড়া শরদ পাওয়ারের দল এনসিপি ৮টি এবং উদ্ভব ঠাকরের শিবসেনা ৯টি আসন জিতেছে।
বিজেপির জন্য সবচেয়ে মর্মান্তিক ধাক্কা রাম রাজ্যেই, দলটি উত্তর প্রদেশের ৮০ টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩৩টিতে জয় পেয়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এখানে ৬২ আসন জিতেছিল। অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টি বড় লাভ করেছে এবং ৩৭টি আসনে তারা জিতেছে ফলে সপার শক্তি প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আঞ্চলিক দল হিসেবে তাদের প্রভাব যথেষ্টই থাকবে এবার।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে ২৯টি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে তাদের শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি হয়েছে ২০১৯ সালের তুলনায়। কারণ এবার ১১ জন সাংসদ বেশি থাকছে তাদের হাতে। ফলে মোদী বিরোধিতার সুর আরও জোরালো করতে পারবে তৃণমূল।
অন্যদিকে, অন্ধপ্রদেশের তেলেগু দেশম পার্টি ১৬টি আসনে জিতেছে। ফলে এবার চন্দ্রবাবুর পার্টি সরকারের অন্যতম চালিকা শক্তি। দক্ষিণের এই আঞ্চলিক দলটির শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।