মদনমোহন সামন্ত, কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ :— পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ-এর ২০২৪-এর মাধ্যমিক পরীক্ষায় চমৎকার করল কলকাতা পুলিশের যাদবপুর থানা। ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার ছিল দ্বিতীয় দিন। দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী টালিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী টালিগঞ্জ ফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা সানিয়া খাতুনের কাছে সেদিনের সকাল শুরু হয়েছিল অন্য খাতে!
প্রথম দিনের মত দ্বিতীয় দিনেও সানিয়া তার বাবার সঙ্গেই যাদবপুরের যাদবপুর বালিকা বিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসছিল। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত আচমকা এক দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় সানিয়ার বাবাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। মেয়ে একা পড়ে যায়! ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব সানিয়া কোনওমতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে বুঝতে পারে তার অ্যাডমিট কার্ডই নিয়ে আসা হয়নি। পরীক্ষা শুরুর সময় এগিয়ে আসছিল। হতচকিত সানিয়া কি করবে বুঝতে পারছিল না।
এমন সময় মসিহা হয়ে দেখা দিলেন যাদবপুর থানাতে কর্মরতা মহিলা কনস্টেবল সুমনা মণ্ডল, তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সার্জেন্ট অরবিন্দ হালদারের সঙ্গে সহযোগিতা করে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশেপাশে কড়া নজরদারির। তিনি সানিয়ার বিষয়টি সহমর্মিতার সঙ্গে অনুধাবন করে তাকে পরিচিত বা বাড়ির কারও ফোন নম্বর জানতে চান, যাতে চটজলদি যোগাযোগ করে সমস্যার আশু সমাধান করা যায়! বিধ্বস্ত সানিয়া কারও মোবাইল নম্বর মনে করতে পারছিল না। সময় ক্রমশ কমে আসছিল। যা করার দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে বুঝে সার্জেন্ট অরবিন্দ হালদার ও মহিলা কনস্টেবল সুমনা মণ্ডল সানিয়াকে পুলিশ বাইকেই তৎক্ষণাৎ তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসতে ছুটে যান।
সঠিক সময়ের মধ্যেই সানিয়া টালিগঞ্জ থেকে যাদবপুরের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে ঢুকতে পেয়ে দৃশ্যতই খুশি হয়েছিল। সব কিছু ভালয় ভালয় মিটে গেল সুমনার উপস্থিত বুদ্ধি ও অরবিন্দ’র যৌথ সহায়তায়। যাদবপুর থানা তাদের জন্য গর্বিত। অপরাধ দমনের কাজ ছাড়াও এমন একটি মানবিক কাজে যে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁদেরই কর্মী, তাতে গর্বিত কলকাতা পুলিশও। এমন একটি খবর তাঁরা বেমালুম চেপে যেতে চেয়েছিলেন কর্তব্যবোধ থেকে। একটু দেরি হলেও এমন একটি খবর না করে পারা গেল না। কুর্নিশ!