।।।কবিতা।।।
নিরবতা
মৃত্যুঞ্জয় হালদার।।।।।
একটু আমি ঘুমিয়ে পড়তে পারি
সব ভাবনা শিকেয় দিলাম তুলে
পারলে তোমরা মাথায় কোরো বাড়ি
একটু আমি উঠলাম কি দুলে!
কথার পরে কথা গেলাম রেখে
পড়ে নিও আমার মনের ব্যথা
হয়তো তখন ফিরবে আমায় ডেকে
থাকব আমি কেবল নিরবতা।
———-
সেই ছেলেটা
পীযূষকান্তি সরকার।।।।।।।।।।
আজও আমার সেই ছেলেটা
পথের ধারে করে খেলা,
অনেক ভাবার পরে পেলাম,
সেই তো আমার ছোটবেলা।
ছেলেবেলার সেই ছেলেটার
থেকে থেকে কতই সাজ
এই সেজেছে কলম্বাস তো
এই সাজলো পুরু রাজ।
সব খাতাতে একশো চাই
ছোটবেলা ভাবছে খুব
বঁড়শি-ঘুড়ি চুলোয় যাক
চাই না ঘাটে হাঁসের ডুব।
এই ছেলেটা ভেলভেলেটা
আমার বাড়ি যাবি তুই?
প্রিয় আমার ছোটবেলা!
ভাবছি তোকে কোথায় থুই!
———-
আমি অধিকারের কাছে হেরে গেছি
অরুণ কুমার ঘড়াই।।।।।।।।।।।।
চাকরিটা দরকার ছিল খুব
বিবেককে বিকোতে পারিনি বলে,
মেধা কাঁদছে…
শিক্ষা ধুঁকছে—
মানব সম্পদ পোকার যন্ত্রণায় অস্থির
দুঃস্থ মেধা বড় অসহায়, শিক্ষা বিকোচ্ছে:
শিক্ষিত ক্রীতদাস…
বিবর্তন উন্নয়নে বেসামাল, অসুস্থ
মোরাই ভরা ফসল, ইঁন্দুরের উৎপাত
তবু উৎসব নবান্ন, বাংলা হাসে…
দু’হাত তুলে আছি
চূড়ান্ত অবক্ষয় একশো চুয়াল্লিশ
চুপ কোনো কথা হবে না:
দেশ এগোচ্ছে…
বুদ্ধিজীবী মনুষ্যত্ব বিক্রি করে, এমন কাঙাল
সভ্যতা পুড়ছে; অস্তিত্ব সংকট
হরপ্পা এখনই নেমে আসুক:
দেশ বিপন্ন…
আমরা অন্ধ আর বোবার মতো বেঁচে আছি
দুঃসাহস দুঃস্বপ্নে বিকল, প্রতিবাদ ভুলেছে
শুধু নিজেকে বিক্রি হতে বাকি…
বেকারত্ব তুমি কি চাও!
চাকরি না আত্মহত্যা
আমি তো মানুষ, আমার খিদে আছে…
আমি একমুঠো ভাত চাই:
বেশ।
———-
চাপা পড়ে থাকা কবিতাগুলি
কাঞ্চন রায়।।।।।।।।।।।।।
একটা সময় ছিল— যখন কবিতাগুলি বন্দি,
একটা ডায়েরি যেটা আপাদমস্তক ভরে রাখা কালো রাত্রির খামে…
একটা সময় ছিল— যখন কবিতাগুলি মুখ চেয়ে থাকত,
এক পাতা দু’পাতা ছাপা-কালি অক্ষরে…
বিশ-বিশটা বছর পার,
ক্লাস সেভেন-এইটের নীল মাখা খাতাগুলো আজ
সাদামাটা নদের মধ্যখাতে বইছে।
প্রথম ঝর্ণা, অনেকটা উঁচু মেঘ নিয়ে
হঠাৎ আঁছড়ে পড়া, চড়াই উতরাই পেরিয়ে
একঘেয়েমির ‘সমাধি-স্রোতস্বিনী’
আমার সাথে ওরাও দেখেছে।
তাই আজকের এই মুঠো বন্ধ প্রাপ্তিগুলো
আমার কাছে নেহাতই আনন্দ,
কিন্তু ওদের কাছে বহু দিন আটকে রাখা উচ্ছ্বাসের ছাড়পত্র…