সূর্য চট্টোপাধ্যায়, নদীয়া: রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বুথভিত্তিক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হল হবিবপুরে। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সব বিধানসভার নেতা থেকে কর্মীরা এই কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রায় ১১ টি গাড়ির কনভয় করে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তায় এলেন অনুব্রত মন্ডল। এমনি নিরাপত্তা যে, সাংবাদিকদের ও তাঁর কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না প্রশাসন। নদীয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরী দত্তের পাশে গিয়ে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বসলেন, শুরু করলেন বিভিন্ন কর্মী ও নেতার সাথে প্রশ্নোত্তরপর্ব।

এই কর্মীসভায় যোগদান করেন নদীয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডঃ তাপস মন্ডল, নদীয়া জেলাপরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু, মেন্টর বাণীকুমার রায়, তাপস ঘোষ, নীলিমা নাগ, রানাঘাট পৌরসভার পৌরোপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়, শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য্য, পৌরপতি অজয় দে।

উপস্থিত ছিলেন  রানাঘাটের বিধায়ক শঙ্কর সিংহ, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, রাজ্যসভার সাংসদ আবীররঞ্জন বিশ্বাস এছাড়াও অগণিত ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি , বুথ সভাপতি এবং কর্মীবৃন্দ।

গৌরী দত্ত এবং শঙ্কর সিংহের ওপর ভরসা রেখে আলোচনা শুরু করেন অনুব্রত এরই মধ্যে শান্তিপুরের বিধায়ক ও পৌরপতির মধ্যে সব সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ারও নিদান দেন।

পৌরপতি অজয় দে বলেন, “আমি ৪০ বছর ধরে ডানপন্থী দল করছি, তাই দলের কি করলে ভালো হয় সেটা আমার অজানা নয়।” তিনি এও বলেন যে – “এমন কিছু কথা আছে যা এই কর্মী সভায় বলার বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না, আবার সেই কথা গুলো এড়িয়ে যাওয়াও যায় না”।

তিনি বলেন সবাই মিলে সুস্থ পরিবেশ রেখে ভোট করলে অবশ্যই জিতবেন। শঙ্কর সিংহের ওপর অজয় দে-ও ভরসা রেখেই তাঁর বক্তব্য রাখেন। তবে দলীয় সূত্রে খবর সেদিন অজয় দে-র বক্তব্যে নতুন থেকে পুরোনো সকল কর্মীরাই উজ্জীবিত হয়েছেন।

তাঁর বক্তব্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতার আভাস পাওয়া গেছে। তবে অনুব্রত মন্ডলও হবিবপুরের কর্মীসভায় টের পেয়েছেন যে, এটা বীরভূম জেলা নয়, এটা নদীয়া জেলা। এখানে তাঁর পাঁচন প্রক্রিয়া কাজে আসবে কিনা তা নিয়ে তিনি নিজে তো বটেই দলের সাধারণ কর্মীদের ভেতরেই দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

সেটা বুঝে দলীয় কর্মীসভায় অনুব্রত পাঁচন শব্দটাই সেদিন মুখে আনেন নি। বরং কর্মী ও নেতাদের উদ্দ্যেশ্যে হাতজোড় করে বলেছেন নিজেদের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে নিতে। বিভিন্ন ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি এবং পৌরসভার চেয়ারম্যানদের সাথে আলাপ আলোচনার পর অনুব্রত আশ্বাস দিয়ে কর্মীদেরকে বললেন যে – আপনারা যদি একসাথে থেকে লড়াই করেন তাহলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে আমরা কমকরে আড়াই লক্ষ ভোটে লিড নিয়ে জিতবো।

এই শুনে বিজেপি-র পক্ষ থেকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে যে- ভোটটা পেরোক ওরা নিজেরাই দেখবে ওরা আড়াই লক্ষ ভোটে জিতলো না হারলো। এখন কয়েকমাসের অপেক্ষা। তবে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে পুরোনো তৃণমূল বনাম নব্য তৃণমূলের দ্বন্দ্ব একটা ফারাক ফেলবেই এমনই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here