তিনদিন কেটে গিয়েছে। এখনও স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান-ধর্নায় জুনিয়ার ডাক্তাররা। এর মধ্যেই ফের একবার আলোচনা চেয়ে আন্দোলনকারীদের চিঠি দিলেন মুখ্যসচিব। বিকেল পাঁচটার সময় বৈঠকে বসার কথা বলে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ‘খোলা মনে’ই এই আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে মুখ্যসচিবের পাঠানো চিঠিতে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই প্রথম নবান্নের তরফে পাঠানো কোনও চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার উল্লেখ করা হল। এখন দেখার মুখ্যসচিবের ডাকে সাড়া দিয়ে জুনিয়ার চিকিৎসকরা নবান্নে যান কিনা। তবে এদিন যে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাতে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দেওয়া একাধিক শর্তই মানা হয়নি (RG Kar Hospital) ।
যেমন জুনিয়ার ডাক্তাররা প্রথমদিন থেকে বলে আসছেন অন্তত ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে তাঁরা বৈঠকে যাবেন। এমনকি এই বিষয়ে নবান্নে পাঠানো চিঠিতেও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এদিন মুখ্যসচিব যে চিঠি দিয়েছেন তাতে আবারও ১৫ জনের প্রতিনিধির কথা বলা হয়েছে। এমনকি জুনিয়ার ডাক্তাররা বৈঠকের লাইভ সম্প্রচারের দাবি জানিয়েছেন। তাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে স্বচ্ছতার প্রশ্নে সম্পূর্ণ বৈঠকটা রেকর্ডিং করে রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে কেন সরকার বৈঠক লাইভ সম্প্রচার করতে চাইছে না? তাহলে কি কোনও ভয় পাচ্ছেন তাঁরা? এমনকি জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে এমন কিছু উঠে আসতে পারে তাতে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা থেকেই কি লাইভ সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা? জোর চর্চা রাজনৈতিকমহলে।
বলে রাখা প্রয়োজন, গত প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে জুনিয়ার ডাক্তারদের সঙ্গে নবান্নের ইমেল-পাল্টা ইমেল চলছে। কার্যত পত্র সংঘাত চরমে ওঠে। এর মধ্যেই বুধবার রাতে নবান্ন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, শর্ত রেখে খোলা মনে কোনও আলোচনা সম্ভব নয়।
এমনকি ডাক্তারদের আন্দোলনে রাজনীতি আছে বলেও চাঞ্চল্যকর দাবি করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পাল্টা জবাব দেন জুনিয়ার ডাক্তাররাও। আর এই পত্র সংঘাতের মধ্যেই কার্যত কিছুটা পিছু হটে আন্দোলনকারীদের মেল পাঠালেন মুখ্যসচিব মনোজ পান্থ।
চিঠিতে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতির কথা বললেও কোনও শর্ত মানা হয়নি। একই সঙ্গে ফের একবার জুনিয়ার ডাক্তারদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। স্পষ্ট বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ সবাইকেই মানতে হয়। তবে এই আলোচনা ‘খোলা মনে’ হবে বলে জানানো হয়েছে। আর তা করতে বিকেলে চার ৫০ মিনিটের মধ্যেই প্রতিনিধি দলকে নবান্নে আসার কথা বলা হয়েছে।