বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: গনেশ’ বা ‘গণপতি’ ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের কাছে পরম ভক্তির এক দেবতা। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তো গনেশ পুজো হয় তার সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা সহ অন্যান্য কয়েকটি রাষ্ট্রে খুবই উৎসবের সঙ্গে পালন করা হয় এই উৎসব। পুরান মতে, শিব ও পার্বতী পুত্র গজানন গণেশ হিন্দুদের বুদ্ধি, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের সর্বোচ্চ দেবতা।
হিন্দুরা বিশ্বাস করেন এই দিন গণেশ তার ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করতে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন। আমাদের বিশ্বাস এই দিনই দেবতা গনেশ মর্ত্যধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন ভক্তদের মনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য। তাই এই উৎসবকে গনেশের জন্মতিথি হিসাবেই পালন করা হয়।
পুরান অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গণেশের পূজা করতে হয়। গণেশ চতুর্থী ২০২৪ তিথি- ৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩ টে ৩১ মিনিট থেকে গণেশ চতুর্থীর তিথি পড়ছে। এই তিথি শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টা ৩৭ মিনিটে। এই তিথিতে একাধিক শুভ যোগ পড়ছে। তবে ভারতের প্রায় সর্বত্রই আজ শনিবার গনেশ সাড়ম্বারের সঙ্গে গনেশ পুজো হচ্ছে। শাস্ত্র মতে এই তিথিতে ভক্তি ভরে দেবতা গনেশের পুজো দিতে পারলে মানুষের জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। পঞ্জিকা জানাচ্ছে, এই দিনে রয়েছে ব্রহ্ম যোগ, সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ, ইন্দ্র যোগ। এছাড়াও চিত্রা ও স্বাতী নক্ষত্রের নির্মাণ হতে চলেছে এই দিনে।
বাংলায় গনেশ পুজোর প্রচলন আগে ততটা না থাকলেও এখন বহু মানুষ খুবই উৎসাহের সঙ্গে গনেশ পুজো করেন। এখানে মূলত একদিনের জন্যই এই পুজো পালন করা হয়। কিন্তু পশ্চিম ভারত সব অন্যান্য বেশ কিছু জায়গায় গণেশ পুজো ১০ দিনের উৎসব। বাপ্পাকে চতুর্থীর দিন ঘরে এনে, চতুর্দশীর দিন বিসর্জন করা হয়। চলতি বছরে ২০২৪ সালে অনন্ত চতুর্দশী পড়ছে ১৭ সেপ্টেম্বর।
এবার আমরা হিন্দু বাঙালির কাছে দেবতা গনেশ কতটা সমৃদ্ধিসূচক তা বোঝানোর জন্য একটা খুব প্রচলিত প্রবাদ উল্লেখ করছি। সেই বাংলা প্রবাদটি হলো – ‘গনেশ উল্টোনো’। এর আর্থ চলমান আর্থিক জীবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া – তা ব্যবসা হোক বা অন্য কোনো আর্থিক রোজগার হোক। আর এর ফলেই বাংলার জনজীবনে গনেশ পুজোর গুরুত্ব আলাদা। পঞ্জিকা মতে এ বছর কলকাতায় গণেশ পুজোর শুভ সময় ৭ সেপ্টেম্বর বেলা ১০.২০ মিনিট থেকে বেলা ১২.৪৯ মিনিটের মধ্যে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে,গণেশ পুজোর জন্য প্রথমে স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরে পুজোর স্থান পরিষ্কার করতে হবে। তারপর একটি পিঁড়িতে লাল বা হলুদ কাপড় বিছিয়ে গণপতি বাপ্পাকে স্থাপন করা উচিত। মন্ত্র জপ করে গণেশ স্থাপনের পর, গণপতিকে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করিয়ে তিলক ও অক্ষত দিয়ে পুজো করতে হবে। পুজোর সময় দূর্বা নিবেদন করতে হয়। আরো বলা আছে, গণেশ চতুর্থীর পূজায় কিছু বিশেষ সামগ্রী প্রয়োজন হয়, যেমন গঙ্গাজল, ধূপ, প্রদীপ, লাল কাপড়, দূর্বা, মোদক, সুপারি, লাড্ডু, পঞ্চামৃত ইত্যাদি। গণেশের পুজোয় এই সমস্ত সামগ্রী ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।