বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: গত ২৪ দিন ধরেই প্রতিবাদে উত্তাল সারা বাংলা সহ সমস্ত দেশ। জুনিয়র ডাক্তাররা গত কয়েকদিন ধরেই ফেটে পড়েছেন প্রতিবাদ আন্দোলনে।
আর আজ, সোমবার সেই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আজ তারা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী লালবাজার অভিযান করেছেন। তাদের প্রধান দাবি বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ। এই দাবিতে সোমবার রাত দশটাতেও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ফিয়ার্স লেনের সামনে অবস্থান চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার রাতে, এই আন্দোলনের মাঝে, জানা গেছে সিজি কমপ্লেক্স থেকে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গাড়িতে তুলে রওনা হয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকদের গন্তব্য নিজার প্যালেস। সূত্রের খবর ডাঃ সন্দীপকে CBI এর দুর্নীতি দমন শাখার গ্রেফতার করেছে । সন্দীপ ঘোষকে রাজ্য সরকার সাসপেন্ড করেনি কেন, প্রতিবাদে এই প্রশ্নেও সোচ্চার হচ্ছেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে সঙ্গে বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে ডাঃ সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড না করার জন্য রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তারা সুর চড়ান।
শনিবার জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস সিবিআই দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান চালায়। সোমবার জুনিয়র ডাক্তাররা লালবাজার অভিযান করেন বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের মুখ্য দাবিটিকে সামনে রেখে। স্লোগান ওঠে: ‘প্রমাণ লোপাটে দায় কার, জবাব চাইতে লালবাজার’। মিছিলে স্লোগান উঠেছে, ‘ছিনিয়ে নিতে দিদির বিচার/ আজকে সবাই লালবাজার’। কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয় দুপুরে। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের কাছে পুলিশ আগে থেকেই তিনটি ব্যারিকেড করে রাখে। মিছিল সেখানে পৌঁছালে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সাথে দফায় দফায় পুলিশের সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
জুনিয়র ডাক্তারদের ৫ দফা দাবির অন্যতম দাবি হল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ। তাঁরা বলেছেন, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে তদন্তে পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যর্থতার দায় নিয়ে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পদত্যাগ করতে হবে। তাদের মিছিলকে আটকানোর জন্য পুলিশের তরফে আটোসাটো নিরপত্তার বলয় তৈরি করা হয়। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রীটে তিনটি ব্যারিকেড করে পুলিশ। কয়েকশো পুলিশ র্যাফ তৈরি রাখা হয়। আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো জানান, ” আমাদের আন্দোলন শান্তিপুর্ণ ও ন্যায় সঙ্গত। ন্যায় সঙ্গত দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে, সেই আন্দোলনকে কোনও ব্যারিকেড প্রতিরোধ করতে পারে না বলেই আমার মনে করি। গণতান্ত্রিক পরিসরে পুলিশের সদর্থক ভূমিকা থাকা উচিৎ। পুলিশ আমাদের সাথে সহযোগিতা করবে বলে আমার আশা রাখছি। বাকিটা আমার পুলিশের উপর ছাড়লাম। আমাদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল যাবে কমিশনারের সাথে দেখা করতে।’’রাতে পুলিশের আধিকারিকরা বলেন যে ওই ব্যারিকেডের সামনে থেকে ২০ জনের প্রতিনিধি দলকে লালবাজার যেতে দেওয়া হবে। কিন্তু আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন মিছিলকে বেন্টিং স্ট্রিট অর্থাৎ লালবাজার ১০০ মিটার আগে অবধি যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে। জুনিয়ার চিকিৎসকরা রাতে বলছেন, যদি তাদের দাবি অনুযায়ী কমিশনার পদত্যাগ না করেন তা’হলে তাঁরা এখানে ২৪ ঘন্টা ৪৮ ঘন্টা ৭২ ঘন্টা টানা অবস্থান করবেন। তারা এটাও বলেন, তারা এক টানা ৪৮ ঘন্টা ডিউটি করতে অভ্যস্ত। ফলে গভীর সংকটে রাজ্য সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।