বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:পুরুলিয়া: কস্তার লাড্ডু’ নামটা শুনলেই পুরুলিয়া অঞ্চলের মানুষের মুখে জল চলে আসে। একটা সময় ছিল যখন এই কস্তার লাড্ডুর কথা মুখে মুখে ঘুরত পঞ্চকোট রাজবংশে। খোদ পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিং দেও প্রেমে পড়েছিলেন এই কস্তার লাড্ডুর। পঞ্চকোট রাজবংশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি হিসেবেই পরিচিত ছিল এই লাড্ডু। এটি মূলত পঞ্চকোট রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হত। এই লাড্ডুর নামকরণ বা তৈরির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে তেমন স্পষ্ট তথ্য নেই। তবে এই লাড্ডু প্রথম আসে বেনারস থেকে কাশীপুরে। পরবর্তীকালে রাজবাড়ির অন্দরমহল থেকেই এই লাড্ডুর সুখ্যাতি ছড়ায়। বেনারস থেকে রেসিপি শিখে এসে কাশীপুর রাজবাড়ির ভিয়েন কস্তার লাড্ডু তৈরি করেছিলেন রাজবাড়ির অন্দরমহলে। তারপর থেকেই রাজঘরানায় এই লাড্ডু তৈরি হতে শুরু হয়।

বিশুদ্ধ গাওয়া ঘিয়ে ছানা, খোয়া, বেসন মেখে তৈরি হত লাড্ডু। গোটা রাজবাড়ি সুগন্ধে মম করত। এই লাড্ডুর প্রেমে মজে উঠেছিলেন রাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিং দেও। জানা যায়, রাজা এই মিঠাই খাওয়ার প্রতিযোগিতা করতেন প্রজাদের মধ্যে। মিষ্টির জগতে কস্তার লাড্ডু নামটি শুনতে আমরা অনভ্যস্ত হলেও, এই নামের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিশাল বড় এক রাজকীয় ইতিহাস। এই লাড্ডুর যাত্রা সুদূর উত্তর থেকে মানভূমের মাটিতে। রাজকীয় ইতিহাসে মোড়া তার পথ। ময়দা, খোয়া ক্ষীর, ছানা, এলাচ, বাদাম, অল্প পরিমাণ চিনি আর খাঁটি ঘিয়ের সংমিশ্রণে তৈরি এই লাড্ডু। কাশীপুরের দু-একটি মিষ্টির দোকানে আজও পাওয়া যায় পঞ্চকোট রাজবংশের বিলুপ্তপ্রায় এই লাড্ডু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *