বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের বাড়ানো হলো কলেজে ভর্তির সময়সীমা। ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে জুন মাসের ১৮ তারিখ থেকে। ঐদিন থেকে প্রাথমিকভাবে বিপুল পরিমাণে সরা পাওয়া গেলেও পরবর্তী সময়ে কলেজের সিট বাঁকি থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের আবেদন জমা পড়ছে না। মূলত এত পরে কলেজ পোর্টাল খোলার কারণেই বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী রাজ্যের বাইরে অথবা বিভিন্ন পেশাগত শিক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। আবার অনেকেই বেসরকারি কলেজ গুলিতেও এডমিশন নিয়ে ফেলেছেন। এই কারণেই এবার আবারো মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাড়ল কলেজে ভর্তির সময়সীমা।

 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে ২০২৫ সালের ২৫ শে জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে WBCAP এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোশ্যাল মাধ্যমে একটি পোস্ট করে এই খবর জানিয়ে দিয়েছেন। এই বছরের কলেজে ভর্তির (WBCAP College Admission) রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ১৫ ই জুলাই শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আরও ১০ দিন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ৪১ দিনের মাথায় সেন্ট্রালাইজড অনলাইন প্লাটফর্ম (WBCAP) খুলে দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ভর্তির রেজিস্ট্রেশন এর জন্য। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন সরকারি এবং সরকার পোষিত কলেজ গুলিতে এই পোর্টালের মাধ্যমেই আবেদন জানাতে পারবেন (WBCAP College Admission)। এই রেজিস্ট্রেশন এর জন্য প্রথম পর্যায়ের পোর্টাল ১ জুলাই পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে প্রথম ধাপের ভর্তি প্রক্রিয়ার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এই কারণে ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ১৫ই জুলাই করে দেওয়া হয়েছিল। এবারে আবারো দশ দিন পিছনে রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা।

এই বছরের দ্বিতীয় বারের জন্য WBCAP সেন্ট্রালাইজ পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা একাধিক কলেজে আবেদন জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এই বছর কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে আশানুরূপ পরিমাণে ছাত্রছাত্রীর সাড়া পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে জানা যাচ্ছে, অভিন্ন পোর্টালের মাধ্যমে ১৯ লক্ষ ৯২ হাজার ৬৬১ জন আবেদন জানাতে পারবেন। এখনো পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৬৯ জন পড়ুয়া আবেদন জানিয়েছেন। অন্য রাজ্য থেকেও ২৩,১৫৯ জন রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে আবেদন জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

কলেজে ভর্তির (WBCAP College Admission) প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ। কলেজের এডমিশন প্রক্রিয়ায় যত দেরি হবে, কলেজের ক্লাস শুরু হতেও ততটাই দেরি হবে এবং পরীক্ষাও তাড়াতাড়ি এগিয়ে আসবে। এর ফলে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। এই বিষয়ে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, ‘যত দ্রুত ভর্তি সম্পন্ন হবে ততই ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধা হবে। এ বছর পুজো আগে। তাই হাতে খুব অল্প সময়। দু’বার সময়সীমা বৃদ্ধি করার ফলে প্রথম সেমিস্টারের সময় কম পাবেন পড়ুয়ারা।’

ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পোর্টালের বাইরে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের তরফে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই ক্লাস শুরু হয়ে যাবে বলে খবর রয়েছে। তাহলে রাজ্যের সরকারি কলেজ গুলির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা অন্য কলেজের তুলনায় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বেন বলে মনে করছেন শিক্ষক মহল। এছাড়াও প্রথম সেমিস্টারের জন্য যথেষ্ট কম সময় পাওয়া যাবে বলেও চিন্তা রয়েছে সকলেরই।

ওবিসি মামলা সংক্রান্ত জটিলতা

এর মধ্যেই কলকাতা উচ্চ আদালতে চলা রাজ্যের ওবিসি মামলা সংক্রান্ত জটিলতার প্রসঙ্গটিও উঠে এসেছে। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের ২২ শে মে হাইকোর্ট থেকে বলে দেওয়া আইনকে মান্যতা দিয়েই ছাত্র-ছাত্রীদের মেরিট লিস্ট তৈরি করা হবে। যেহেতু ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে, তাই কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা দপ্তর এই সিদ্ধান্তই গ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে পরবর্তীকালে কোন পরিবর্তন হলে সেই মতো নির্দেশিকা পরিবর্তন করা হবে। যদিও রাজ্যের মান্যতা দেওয়া আইন মেনেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তাই সেই সিদ্ধান্তের উপরেও নির্ভর করে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া। অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ আটকে রয়েছে এই জটিলতার পিছিয়ে যাচ্ছে পঠন /পাঠন সহ একাধিক শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় যে বিষয়ে একেবারেই উদাসীন রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এটি বিশ্ববিদ্যালয় গুলির অভন্তরীণ ও ব্যক্তিগত বিষয় তবে এখন দেখার বিষয় এই জটিলতা অতিক্রম করে কিভাবে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে সেই দিকেই তাকিয়ে শিক্ষামহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *