বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: লেপচাখা, রামধুরায় তিন বছর আগেও যাঁরা ভবিষ্যতের জন্য হোমস্টে ‘লিজ’ নিয়েছিলেন, এখন তাঁরা তা ছেড়ে দিতে চাইছেন। জয়ন্তীর হাল দেখেই তাঁরা নিজেদের আগামী বুঝতে পারছেন।
ফলে ডুয়ার্সে হোমস্টের পটপরিবর্তন ঘটছে। কিন্তু পাহাড়ি পাকদণ্ডিতে, গ্রামের পর গ্রামে ছবিটা এখন অন্য। চারিদিকে শুধুই হোমস্টে। যা গ্রামীণ অর্থনীতির পরিবর্তন ঘটিয়েছে, যেমনটা চেয়েছিল সরকার। কিন্তু দিনবদলে মালিকানার পরিবর্তন ঘটেছে। বাইরের ‘থাবায়’ এখন লিজে চলছে একাধিক হোমস্টে, এমনই অভিযোগ শোনা যায় পর্যটন মহলে কান পেতে। ফলে পাহাড়ের রোজগারে ভাগ বসাচ্ছেন বহিরাগতরা।
গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবং মূলত মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতেই হোমস্টে নীতি নিয়েছিল রাজ্য সরকার। যার অন্যতম শর্ত ছিল, নিজের বাড়ি-ঘর থাকতে হবে এবং পর্যটকদের আপ্যায়ন করতে হবে নিজেকেই। এমন শর্তেই পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকার কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি পরিকাঠামো গড়ে তুলতে নথিভুক্ত হোমস্টে প্রতি দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। সরকারি সাহায্যে তাকদা, বিজনবাড়ি, তিনচুলে, সিটং, লাভা, আলগারা, ঝালং সহ একাধিক জায়গায় মাথা তুলে দাঁড়ায় হোমস্টে। পর্যটনের গন্তব্য বদলাচ্ছে, বুঝতে পেরে গ্রামীণ পর্যটনে জোর দেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কোভিড এবং পরবর্তী সময়ে পর্যটকরা বেছে নেন ‘অফবিট’ জায়গাগুলিকে। শহরের ব্যবসা মার খেলেও চাঙ্গা হয়ে ওঠে গ্রামীণ পর্যটন। এতেই হোমস্টে-তে নজর পড়ে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের। শুরু হয় নতুন বিনিয়োগ। পালটে যেতে শুরু করে হোমস্টের আদর্শ।
পর্যটন দপ্তরের তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি হোমস্টে রয়েছে কালিম্পংয়ে। প্রায় ১,১৩০টি। দার্জিলিংয়ে সংখ্যাটা ৪২৫। জলপাইগুড়িতে গত দু’বছরে হোমস্টে নীতিতে জোর দিয়েছে সরকার। এখনও পর্যন্ত সেখানে সরকারিভাবে নথিভুক্ত হয়েছে ১৪০টি। কিন্তু পর্যটন মহলের হিসেব বলছে, সব জেলাতেই বাস্তবে সংখ্যাটা কয়েকগুণ বেশি। হোমস্টের নামে বাইরের পুঁজিপতিরা এসে বাড়ি লিজ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন। কোটি কোটি টাকা থাকায় কোন সমস্যাই হচ্ছে না তাদের। তাই যেভাবেই হোক পাহাড়ে ব্যবসা শুরু করছেন তারা, ফলে সমস্যায় পড়ে যাচ্ছেন স্থানীয় হোটেল এবং হোমস্টে মালিকেরা। সমস্যার কারণে একেবারে পিছিয়ে পড়ছেন তারা। তাদেরই অনেকে জানিয়েছেন, এইভাবে চলতে থাকলে ব্যবসার পিছিয়ে পড়তে হবে তাদের।