বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: একসময় অনিচ্ছা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শরীরচর্চার জন্য বাবা-মায়ের আদেশে যেতে হত ভলিবল কোর্টে। সেই ভলিবলই এখন তার নেশা। ইতিমধ্যে জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছে সে।
পরের লক্ষ্য, ‘খেলো ইন্ডিয়া’তে অংশ নেওয়া। চূড়ান্ত অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে এখন সেই লক্ষ্যেই পায়ে পায়ে এগিয়ে চলেছে জলপাইগুড়ি শহর ঘেঁষা খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পান্ডাপাড়া পার্ক মোড়ের মেয়ে শর্মিষ্ঠা ঘোষ। এখন পড়াশোনা করছে শহরের সেন্ট্রাল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে।
বাবা শিবু ঘোষ সবজির দোকানে হেল্পারের কাজ করার পাশাপাশি অবসর সময়ে সবজি বিক্রি করেন। মা গৃহবধূ। শর্মিষ্ঠা গত ৬ থেকে ১০ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলিতে অনুষ্ঠিত ৬৮তম জাতীয় স্কুল গেমসে বাংলা দলের হয়ে অংশ নিয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় নানা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ছেলে ও মেয়েরা আলাদা আলাদা গ্রুপে অংশ নিয়েছিল। বাংলার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিহার, ঝাড়খণ্ড, হিমাচলপ্রদেশ, কেরল, পঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাট। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ওইসব দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শর্মিষ্ঠাদের বাংলা। ফাইনালে গুজরাটকে রীতিমতো পর্যুদস্তু করে বাংলার ১২ জন মেয়ে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা ছিনিয়ে নেয়। খুশির খবর রাজ্যের ওই দলে উত্তরবঙ্গের দুই মেয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। এদের অন্যতম জলপাইগুড়ির ভূমিকন্যা শর্মিষ্ঠা।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ থেকে লম্বা ট্রেন সফর করে ফিরেছে শর্মিষ্ঠা। কথায় কথায় জানায়, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় মা-বাবা রোজ বিকেলে শরীরচর্চার জন্য পান্ডাপাড়া কালীবাড়ি লাগোয়া নবীন সংঘ ক্লাবের মাঠে ভলিবল প্রশিক্ষণ নিতে পাঠিয়ে দিতেন। তখন ভলিবল খেলতে খুব একটা ভালো লাগত না। কোচ বাপ্পা রায়ের হাত ধরেই একের পর এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পদক জয়ের শুরু। তখনই ভলির প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। আর এখন রীতিমতো নেশায় পরিণত হয়েছে। এরপরই ডাক আসে অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় স্কুল ক্রীড়ায়। সেখান থেকেও শর্মিষ্ঠার ঝুলিতে ঢোকে স্বর্ণপদক। কথায় কথায় ছটফটে ক্লাস টেনের পড়ুয়াটি জানায়, আগামীদিনে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ ও তারপর ভারতের হয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াই এখন তার মূল লক্ষ্য। মেয়ের এমন নজরকাড়া সাফল্যে খুশি বাবা শিবু ঘোষ ও মা নন্দিতা ঘোষ। তারা জানালেন অনেক কষ্ট করে তারা তাদের মেয়েকে এই জায়গাতে নিয়ে এসেছেন। মেয়ে বড় হয়ে নাম করুক , এটাই তাদের পাওনা।