বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক: উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা বাগানের উপর বিপদের খাঁড়া ঝুলছে। টি বোর্ডের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাগান থেকে কাঁচা চা পাতা তোলা যাবে।
তারপর কাঁচা চা পাতা তোলা না গেলে ক্ষুদ্র চা বাগানের মালিকদের হাতে অর্থ থাকবে না। শ্রমিকদের মজুরি কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে সর্বভারতীয় ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর, দার্জিলিংয়ের সমতল অংশ, কোচবিহারের জামালদহ ও আলিপুরদুয়ারের একাংশে চা আবাদ হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলার ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক দেবাশিস পালের কথায়, ‘ঠান্ডাঘরে বসে টি বোর্ড উত্তরবঙ্গের চা চাষিদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করছে। যা কখনোই কাম্য নয়।’ ক্ষুদ্র চা বাগানের উপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দুই লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল। বাগানে চা পাতা তুলতে না পারলে ক্ষুদ্র চা চাষিরা মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে অপারগ হয়ে পড়বেন। তখন বাগান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও পথ থাকবে না। ইউনাইটেড ফোরামের চেয়ারম্যান রজত রায় কার্জি বলেন, ‘যদি পাতা তোলার নির্দেশ পরিবর্তন না হয় তাহলে চাষিদের প্রতি চরম অবিচার করা হবে।’
ক্ষুদ্র চা বাগানের পরিসংখ্যান দিয়ে বিজয় জানান, জলপাইগুড়ি জেলায় ২৫ হাজার, উত্তর দিনাজপুরে ১৫ হাজার, দার্জিলিংয়ে ৫ হাজার, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ৫ হাজার ক্ষুদ্র চা বাগান আছে। তাঁর সংযোজন, ‘আমরা উদ্বেগের কথা টি বোর্ডকে যুক্তিসহকারে জানিয়েছি। কিন্তু টি বোর্ড আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। টি বোর্ড তাদের অবস্থানে অনড়। ৩০ নভেম্বর পর্যন্তই পাতা তোলার নির্দেশে তারা অবিচল। এখন যেদিকে পরিস্থিতি মোড় নিচ্ছে সপ্তাহে ছয়দিন কাজ দেওয়া সম্ভব নয়।’
আইটিপিএ প্রোজেক্ট টি গার্ডেন ফোরামের জয়ন্ত বণিক জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের অসহায়তার কথা ক্ষুদ্র চা বাগানের ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের আগে জানিয়ে রেখেছেন। কাঁচা চা পাতা উত্তোলনের উপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতারাও টি বোর্ডের কাছে দরবার করে এসেছেন। তাতেও টি বোর্ড মৌন থেকেছে বলে জয়ন্তর দাবি। আপাতত ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা নিয়েই চিন্তায় তারা।