বেঙ্গল ওয়াচ নিউজ ডেস্ক:কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার আকর্ষণে দার্জিলিং ঘুরতে যান যে সমতলের বাঙালি পর্যটকরা, তাঁরা কতজন নেপালি কবি ভানুভক্ত আচার্যর নাম জানেন এ নিয়ে একটা সমীক্ষা হতেই পারে।
এরকম সমীক্ষা যদি হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে এটাও বলা যেতে পারে, ওই পর্যটকদের আশি শতাংশই কবি ভানুভক্তের নাম শোনেননি বা শুনলেও বিশেষ আগ্রহ দেখাননি। অথচ দুশো বছর আগে জন্ম নেওয়া এই কবি নেপালিদের আদিকবি। সংস্কৃত থেকে নেপালি ভাষায় রামায়ণ অনুবাদের কাজটি তিনিই করেছিলেন। শুধু নেপালি কবি ভানুভক্ত কেন, আমবাঙালি তার ঘরের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতিবেশী সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে খুব যে বেশি উৎসাহী হয়েছে এমন কথা বোধকরি বাঙালিয়ানার অতি বড় সমর্থকও দাবি করতে পারবেন না।
শুরু করেছি নেপালি কবি ভানুভক্তের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে। এই সূত্র ধরেই বলি, পাহাড়ের মানুষের মনে সমতলের প্রতি একটি অভিমান বা ক্ষোভ- যাই বলুন না কেন রয়েছে। এই ক্ষোভ-অভিমানটিকে অস্বীকার করা মূর্খামি। কেন এই ক্ষোভ? কার্সিয়াং শহরে ট্যুরিস্ট গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা করেন রবিন ছেত্রী। রবিন বলছিলেন, ‘সমতলের মানুষরা এখনও আমাদের বাড়ির দারোয়ান, গাড়ির ড্রাইভার আর দার্জিলিংয়ের ট্যুরিস্ট গাইডের বেশি কিছু মনে করে না। কেন, আমাদের ভিতর কোনও যোগ্য মানুষকে কি চোখে পড়ে না ওদের?’ আর ওই যে ভানুভক্তের প্রসঙ্গটি এনেছি ওটি বলছিলেন পুষ্পা প্রধান। পুষ্পা ওই কার্সিয়াংয়েই একটি ছোট রেস্তোরাঁ চালান। ওঁর মেয়ে বেঙ্গালুরুতে থেকে পড়াশোনা করেন। পুষ্পা বলছিলেন, ‘সমতলে ভানুভক্ত কতখানি সমাদর পান? অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ নামকরণের সমর্থনে বাঙালি এবং অবাঙালিরাও আছেন। তাদের যুক্তি জিনিস সারা বিশ্বে সমাদৃত কেন তার নামকরণে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট এর নাম হবে না? উনি তো শুধু বাংলা বা ভারতের নয়, সারা বিশ্বেই বন্দিত। উনার নামের নাম হলে ক্ষতি কি? আপাতত বিভক্ত হয়ে আছে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ, পরিবর্তন হবে না আপাতত একই থাকবে? বিতর্ক থামাতে, সেটাই দেখার অপেক্ষায় সবাই।